প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা ২০২১-২২ অর্থবছরের পেশকৃত বাজেটকে ‘মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষার বাজেট’ আখ্যায়িত করে এর মাধ্যমে চলমান করোনার মধ্যেও দেশকে এগিয়ে নেয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আজ অপরাহ্নে একাদশ জাতীয় সংসদের ত্রয়োদশ অধিবেশন (২০২১-২২ সালের বাজেট অধিবেশন) এর সমাপনী ভাষণে একথা বলেন। স্পিকার ড.শিরীন শারমিন চৌধুরী এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষার বিষয়টিতে প্রাধান্য দিয়ে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের যে বাজেট অর্থমন্ত্রী সংসদে পেশ করেছেন-আমি মনেকরি সেই বাজেট বাস্তবায়ন করতে আমরা সক্ষম হব। বাংলাদেশ আরো একধাপ সামনে এগিয়ে যাবে এবং জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলাদেশ ইনশাল্লাহ আমরা গড়ে তুলবো।’
‘লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই দেশে শহীদের রক্ত বৃথা যেতে পারেনা,’ মর্মে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করতে গিয়েই জাতির পিতা জীবন দিয়ে গেছেন। সেই সাথে তিনি তাঁর মা’, তিন ভাই এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের হারিয়েছেন।
স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যেন সাফল্য অর্জন করতে না পারে, কোনদিন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে সেই ষড়যন্ত্র নিয়েই এই আঘাত এসেছিল। তবে, আজকের বাংলাদেশ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে, বলেন তিনি।
অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যে বাজেট দিলেও এই বাজেট নিয়ে বিরোধী দলীয় উপনেতা এবং সংসদ সদস্যদের সমালোচনার উত্তরে প্রধানমন্ত্রী তাঁদেরকে বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তারপর মতামত দেয়ার আহবান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশবাসীর মাথাপিছু আয় এই করোনার মধ্যে বৃদ্ধি পেয়ে দুই হাজার ২২৭ মার্কিন ডলার হয়েছে যা অনেক দেশকে ছাড়িয়ে গেছে। এই ধারাটা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে।
এই সময়ে আমাদের রেমিট্যান্স এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টিও স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি যথেষ্ট শক্তিশালী এবং এর মধ্যে শ্রীলংকা ২৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ চাওয়ায় তাঁদের সেই ঋণ প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ সবসময় আঞ্চলিক সহযোগিতার বিষয়ে যে আন্তরিক সেটা প্রমাণ করেছে।
তাছাড়া ঋণ মওকুফের মাধ্যমে সুদান ও সোমালিয়ার ঋণ মওকুফ তহবিলে বাংলাদেশ অংশ নিয়েছে। ফলে বাংলাদেশ যে অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সেটাই প্রমাণিত হয়েছে, বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে বহি:বিশ্বে যেমন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বেড়েছে তেমনি জনগণের সম্মানও বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সামাজিক সূচক সমূহে আমাদের শক্ত অবস্থান বিশ্ব মহলে প্রশংসিত হয়েছে।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন প্রতিবেদন ২০২১ এর তথ্য অনুযায়ী এসডিজি বাস্তবায়নের অগ্রগতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় তিনটি দেশের একটির স্বীকৃতি পেয়েছে এবং বৈশ্বিক শান্তি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান সাত ধাপ এগিয়েছে।