প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ক্ষমতায় থাকার মানে হচ্ছে মানুষের সেবা করার সুযোগ পাওয়া। মানুষের সেবক হিসেবেই তৃণমূলের বঞ্চিত মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করছে সরকার। দেশের একটি মানুষও ভূমিহীন গৃহহীন থাকবে না।
রোববার (২০ জুন) মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে দ্বিতীয় দফায় বিনামূল্যে জমিসহ ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
সরকার প্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ভোগ করতে নয়, এসেছে নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াতে। সরকারের উন্নয়ন থেকে কেউ বাদ পড়বে না বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি ঘর পেয়ে দুঃখী মানুষের মুখে যে হাসি দেখতে পাই এর চেয়ে বড় পাওয়া আমার জীবনে আর কিছু নেই। মানুষের জন্য মানুষ এটাই সব থেকে বড় কথা।
তিনি বলেন, পুরো বাংলাদেশ আমি ঘুরেছি। গ্রামে-গঞ্জে, মাঠে-ঘাটে। আওয়ামী লীগ অধিকার নিয়ে কাজ করে। জাতির পিতা মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্ব দিয়েছেন। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, যেখানে জমি পাব না। এই তহবিল থেকে জমি কিনে দেব। ঘরে করে দেব। এভাবে আমরা চাচ্ছি, বাংলাদেশের কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না। কোথাও কেউ গৃহহীন থাকলে আমাদের জানাবেন। আমরা তাদের ঘরবাড়ি করে দেব। আমি মনে করি, এতটুকু করলে আত্মা শান্তি পাবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য স্থির করেছি, বাংলাদেশকে দারিদ্রমুক্ত করব। এর জন্য শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছি, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিয়েছি। মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করেছি। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি গৃহহীন মানুষকে ঘরবাড়ি তৈরি করে দিচ্ছি।
সরকারপ্রধান বলেন, বস্তিবাসীর জন্য ঢাকায় ভাড়ায় থাকার জন্য ফ্ল্যাট করে দিচ্ছি। অর্থনৈতিক নীতিমালায় আমরা তৃণমূলকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। গ্রাম পর্যায়ের মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়া। তাদের খাদ্য, শিক্ষা ও বাসস্থান নিশ্চিত করা। তৃণমূল মানুষের জীবন জীবিকা নিশ্চিত করছি।
তিনি বলেন, ক্ষমতা থেকে নিজে খাব, নিজে ভালো থাকব, এটা নয়। ক্ষমতা আমাদের কাছে ভোগের বিষয় নয়। কীভাবে মানুষকে ভালো রাখা যায় এটা হলো বড়।
প্রসঙ্গত, আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর আওতায় বরিশাল, ভোলা, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, নোয়াখালী, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কুড়িগ্রাম ও রাঙামাটিসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় হতদরিদ্র পরিবারের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে ঘরগুলো। প্রত্যেকটি ঘরে আছে দুটি কক্ষ, একটি বারান্দা, একটি বাথরুম ও রান্নাঘর। দুই শতাংশ জমির ওপর নির্মিত একেকটি ঘর পাবেন ভূমিহীনরা।
প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে ঘর পাওয়ার অপেক্ষায় তালিকাভুক্ত সাড়ে ৫৩ হাজার হতদরিদ্র পরিবার। এর আগে প্রথম দফায় ৬৬ হাজার ১৮৯টি ভূমিহীন পরিবারকে বিনামূল্যে জমিসহ ঘর উপহার দেন প্রধানমন্ত্রী।