লবণ (salt) রান্নাঘরের অন্যতম একটি প্রয়োজনীয় উপাদান। সব রান্নায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে লবনে। লবণে থাকে সোডিয়াম (sodium) ও ক্লোরাইড (chloride) যা স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। সোডিয়াম নার্ভের জন্য ও দেহের পেশির জন্য উপকারী অন্যদিকে ক্লোরাইড দেহের কোষের তরল জাতীয় পদার্থের স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে সাহায্য করে। লবণ দেহের রক্তচাপের (blood pressure) উপর প্রভাব বিস্তার করে। আমরা অনেকেই জানি যে, বেশি মাত্রায় লবণ খেলে উচ্চ রক্তচাপের (high blood pressure) সমস্যা হতে পারে। সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে যে বেশি মাত্রায় লবণ খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (immunity) দুর্বল হয়ে পড়ে, যা করোনা (corona) আবহে মারাত্মক হতে পারে।
সায়েন্স ট্রাসিশনাল মেডিসিনের (science transitional medicine) এক গবেষণা অনুযায়ী বেশি মাত্রায় লবণ খেলে রোগ প্রতিরোধকারী কোষ গুলির ক্ষমতা কমে যেতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে আমাদের শরীরে বিভিন্ন অঙ্গে রোগ প্রতিরোধ সিস্টেম বেশি মাত্রায় লবণ খাওয়ার ফলে ব্যাহত হয়। জার্মানির (Germany) ইউনিভার্সিটি হসপিটাল ওফ বণ (University hospital of Bonn) কর্তৃক এক গবেষণায় দেখা গেছে যে বেশি মাত্রায় লবণ কিডনির (Kidney) ব্যাকটেরিয়া জনিত সংক্রমণ এসকেরিকিয়া কোলাই (Escherichia coli) ঘটাতে পারে। গবেষকদের কথা অনুযায়ী বেশি মাত্রায় লবণ খাওয়ার প্রভাব স্বল্পমেয়াদী নয়। একটি লিসটেরিয়া (Listeria) ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত ইদুরের ওপর গবেষণা করে দেখা গেছে যে বেশি মাত্রায় নুন যুক্ত ডায়েট ইদুরটিকে খাওয়ানোর ফলে সেটির শরীরে সংক্রমনের মাত্রা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বেশি মাত্রায় নুন যুক্ত খাবার খেলে কিডনির সংক্রমণ রোধক নিউট্রফিল (neutriphil) নামক রোগ প্রতিরোধক কোষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization) এর মত অনুসারে প্রত্যেকদিন একজন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের ৫ গ্রামের থেকে বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে লবণের পরিমাণ প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় কম হওয়া উচিত। তাদের এনার্জির চাহিদা অনুযায়ী তাদের লবণের পরিমাণ নির্ধারিত করা প্রয়োজন।
এই গবেষণায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী দেখা গেছে যে শরীরকে সুস্থ সবল রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অটুট রাখতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বলে দেওয়া মাপকাঠির বাইরে লবণের খাওয়া উচিত নয়। তাই স্ন্যাক্স জাতীয় খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।
এন-কে