করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত বছর প্রায় ৯ মাস হোটেল-মোটেল বন্ধ ছিল। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকে করোনা সংক্রমণ কমায় পর্যটনশিল্প আলোর মুখ দেখেছিল। কিন্তু মার্চে ফের সংক্রমণ বাড়ায় মানুষের চলাচল সীমিত করতে হোটেল-মোটেলসহ দূরপাল্লার বাস বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে পর্যটনশিল্প চরম সঙ্কটে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রথম দফায় করোনা সংক্রমণের পর দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণরোধ ও সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করায় জনশূন্য জনপদে পরিণত হয়েছে কক্সবাজার। পর্যটন জোন ও শহরের শতশত হোটেল–মোটেল–রেস্তোরাঁ পর্যটক জনশূন্য।
তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইস অ্যান্ড রিসোর্টের পরিচালক আবদুল কাদের মিশু বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার লকডাউন ঘোষণা করায় পর্যটক নেই অথচ হোটেল খোলা রাখতে হচ্ছে। হোটেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, বিদ্যুৎ খরচ ও ঋণের টাকা পরিশোধ করতে হয়।
শুধু তারকা হোটেল নয়, কক্সবাজারে অবস্থিত সবগুলো হোটেল, গেস্ট হাউস, মোটেল, কটেজ ও ফ্ল্যাটসহ পর্যটনসেবী প্রায় সাড়ে চারশ আবাসন প্রতিষ্ঠানে পর্যটক না থাকায় খাঁ খাঁ করছে।
হোটেল-মোটেল অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম ধাপে হোটেল-মোটেল বন্ধ রাখা হয়। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকে সংক্রমণ কমায় ব্যবসায়ীরা লোকসান কেটে ওঠার চেষ্টা করছিল। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় লকডাউনে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা। এপ্রিলের শুরু থেকে কোনো হোটেলে পর্যটক নেই।
ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের দেওয়া দ্বিতীয় দফা লকডাউনের প্রায় দুই মাসে নগরীর সাড়ে ৪০০ আবাসন প্রতিষ্ঠানে দিনে ক্ষতি প্রায় ১০ কোটি টাকা। আর আড়াই শতাধিক খাবার হোটেলে ক্ষতি হচ্ছে প্রায় তিন কোটি টাকা। হোটেল রিলেটেড আনুষঙ্গিক অন্যান্য সেক্টরে ক্ষতি প্রায় সাত কোটি টাকা।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি ওমর সুলতান বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে পর্যটনশিল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে। ব্যবসায়ীরা নিয়মিত লোকসান গুণতে হচ্ছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, পর্যটনশিল্পের প্রতি সরকারের বিশেষ নজর আছে। পর্যটনসেবীদের জন্য কোনো বরাদ্দ এলে তা যথাযথভাবে বিতরণ করা হবে।