নাটোরে বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা: প্রধান আসামি রাঙ্গুনিয়ায় গ্রেফতার

নাটোরের গুরুদাসপুরের বহুল আলোচিত সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ বাবলু শাকিদারকে (৭২) কুপিয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামি আনোয়ার হোসেনকে (৩৫) চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া হতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

সোমবার (২৪ মে) সকাল ১০টায় এএসপি (রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন শামীমের নেতৃত্বে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মিল্কি, এসআই রবিউল ইসলামসহ রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশের একটি চৌকস দল উপজেলাধীন পোমরা শান্তিরহাট এলাকায় ঝটিকা অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের পরপরই গা ঢাকা দেওয়ার উদ্দেশ্যে আসামি আনোয়ার নাটোর থেকে পালিয়ে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় চলে আসেন। এখানে তিনি জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি নির্মাণ শ্রমিক দলের সাথে যোগ দেন। নিজেকে নিরাপদ রাখতে সুচতুর আনোয়ার নিজের নাম ও ঠিকানাও বদলে ফেলেন। অন্য শ্রমিকদের কাছে তিনি নিজের নাম তামিম এবং বাড়ি বগুড়া বলে প্রকাশ করেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিতে সিম কার্ড সমেত নিজের মোবাইল ফোনটিকেও ভেঙ্গে কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য নির্মাণ শ্রমিকেরা জানান, আনোয়ারের আচরণ এতই স্বাভাবিক ও প্রাণবন্ত ছিল যে, তারা ঘুণাক্ষরেও চিন্তা করতে পারেননি, তিনি (আনোয়ার) একটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে এখানে এসেছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারের পর আনোয়ার পুলিশের নিকট তার সঠিক নাম ঠিকানা প্রকাশ করেন। তিনি নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলাধীন নওপাড়া গ্রামের মৃত কেফাতুল্লাহর পুত্র। এ সময় তিনি নানান অসাড় যুক্তি দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টাও চালান। এমনকি তিনি পুলিশকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, যেহেতু এই এলাকায় তার বিরুদ্ধে কোনও মামলা নেই, তাই তাদের (পুলিশ) উচিত হবে তাকে ছেড়ে দেওয়া।

উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলাধীন নওপাড়া এলাকায় জমিজমার বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় বাবলু শাকিদার (৭২) নামের এক বৃদ্ধকে তার বাড়ির সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ সংক্রান্তে ঘটনার পরদিন নিহতের পুত্র লোকমান শাকিদার বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃত আসামি আনোয়ার ও তার ভাই আয়নালের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার দীর্ঘ ৫৭ দিন পর প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হলো পুলিশ।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রামের এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, মূলত নাটোর পুলিশের অনুরোধে প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে আমরা আসামি আনোয়ারকে শনাক্ত ও গ্রেফতার করেছি। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তাকে নাটোরের গুরুদাসপুর থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img