পাচারকারীদের রিয়াল আত্মসাত দ্বন্দ্বে সিভিল এভিয়েশনের কর্মী ওসমান খুন

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে পাচার হয়ে আসা সৌদি রিয়াল আত্মসাতের দ্বন্দ্বে ওসমান সিকদারকে খুন করা হয়। শুক্রবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার শাহরিয়ার হাসানের আদালতে গ্রেফতার ইব্রাহিম খলিলের ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য উঠে আসে।

জবানবন্দিতে খুনের বর্ণনা, কারা জড়িত এবং পাচারকারী চক্রের আরও অনেকের নাম-পরিচয় প্রকাশ করে ইব্রাহিম। ইব্রাহিম খলিল বিমানবন্দরের সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের ইলেকট্রিশিয়ান। অন্যদিকে খুনের শিকার ওসমান সিকদার ছিলেন অফিস সহকারী।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর সংলগ্ন লিংকরোড থেকে ওসমান সিকদারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ইব্রাহীম খলিল বাদেও বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মী বাদল মজুমদার ও তাদের সহযোগী মোহাম্মদ আরিফকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

১৬৪ ধারায় দেওয়া ইব্রাহিম খলিলের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি সূত্রে জানা গেছে, ২৯ নভেম্বর বিমানবন্দর দিয়ে সৌদি আরবের মুদ্রা ২৯ হাজার রিয়াল পাচার ও ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকে উসমান সিকদারকে খুন করা হয়।

রিয়াল পাচারকারী চক্রের সদস্য ফটিকছড়ির মোহাম্মদ রাসেল নামে এক ব্যক্তি খুনের শিকার ওসমান সিকদারকে ২৯ হাজার রিয়াল পাচার করতে দেন। কথা ছিল ইমিগ্রেশন পার হওয়া একজন যাত্রীর হাতে মুদ্রাগুলো তুলে দেবেন ওসমান। কিন্তু ওসমান সিকদার মুদ্রাগুলো ওই যাত্রীকে না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেন। তিনি চক্রের অন্য সদস্যদের জানায় একটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা মুদ্রাগুলো নিয়ে গেছে। কিন্তু পরে বিমানবন্দরের কর্মচারী এবং চক্রের সদস্য ইব্রাহীম খলিল জানতে পারেন গোয়েন্দা সংস্থা কোনো মুদ্রা নেয়নি, সেগুলো ওসমান সিকদার আত্মসাৎ করেছেন। ইব্রাহীম খলিল বিষয়টি চক্রের অন্যদের জানিয়ে দিলে গত ১১ ডিসেম্বর বুধবার রাত তিনটার দিকে ইব্রাহীম খলিলসহ ৫ জন একটি গাড়ি নিয়ে সিভিল এভিয়েশন আবাসিক এলাকায় ওসমান সিকদারের বাসায় যান। তারা তাকে মুদ্রাগুলো ফেরত দিতে ওসমানকে চাপ দেন। এসময় ওসমান মুদ্রা ফেরত না দিয়ে বাড়াবাড়ি করলে কারা কারা মুদ্রা পাচারে জড়িত সব ফাঁস করে দেবেন বলে হুমকি দেন। একপর্যায়ে ৫ জনে মিলে বাসার ভিতরেই ওসমান সিকদারকে বেধড়ক পেটানো শুরু করেন। দফায় দফায় পেটানোর ফলে এক পর্যায়ে তিনি নিথর হয়ে যান। পরে ৫ জনে মিলে তাকে গাড়ির পেছনের ডালায় ভরে বিচ এলাকায় নিয়ে লিংক রোডের পাশে ফেলে দিয়ে চলে যান। সেখান থেকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে।

পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে ইব্রাহীম খলিল নিজে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সিভিল এভিয়েশনের আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারীর নাম জানিয়েছেন।

পতেঙ্গা থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, খুনের ঘটনায় বিমানবন্দরের সিভিল এভিয়েশনের দুই কর্মচারীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরমধ্যে আসামি ইব্রাহীম খলিল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

এমজে/

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img