আলু পুষ্টির দিক দিয়ে ভাত ও গমের সমতুল্য। এছাড়া খাদ্য হিসাবে আলু সহজেই হজম হয়। আলুতে যথেষ্ঠ পরিমানে খাদ্য শক্তি রয়েছে। গরিবের খাদ্য হিসেবেও বেশ পরিচিত আলু। সেই আলুর দাম এখন নাগালের বাইরে। গত এক সপ্তাহে চট্টগ্রামের মিরসরাইতে আলুর দাম কেজিতে অন্তত ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
বিক্রেতাদের শঙ্কা, আগামী কয়েকদিনে আলুর দাম আরও বাড়তে পারে। বুধবার উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেল।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে খুচরা বাজারে ডায়মন্ড নামে পরিচিত বিক্রমপুরের আলু ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে পাঁচ কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকায়, কেজিতে পড়ছে ৬৬ থেকে ৭০ টাকা।
অথচ গত সপ্তাহেও প্রতি কেজি আলু ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছিল। অর্থাৎ গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে অন্তত ১০ থেকে ১৫ টাকা।
এদিকে বিক্রেতারা আশঙ্কা করছেন, আলুর দাম আগামী কয়েকদিনে আরও বাড়তে পারে। এর প্রমাণ গ্রামের দোকানগুলোতে এখনই পাওয়া যাচ্ছে। কিছু দোকানে এখন থেকেই ৭৫-৮০ টাকা দরে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে।
দোকানিদের দাবি, পাইকারি বাজারে আলুর দাম বেড়েছে। ৬৮-৬৯ টাকায় প্রতি কেজি আলু পাইকারি বাজার থেকে কিনতে হচ্ছে। পরিবহন খরচ ও নষ্ট আলু বাদ দেওয়ার পর প্রতি কেজির দাম পড়ছে ৭২-৭৩ টাকা। তাই বাধ্য হয়ে ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বড়তাকিয়া বাজারের এক বিক্রেতা বলেন, শুনেছি আলুর দাম আরও বাড়বে। গত চারদিনেই কেজিতে ১০ টাকা দাম বাড়ছে। নতুন আলু ওঠার আগে এ দাম আর কমবে না। আলুর দাম ১০০ টাকাও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
বড়দারোগাহাট বাজারের পাইকারি বিক্রেতা জানে আলম বলেন, এক সপ্তাহ আগেও আলুর পাল্লা বিক্রি করেছি ২৮০ টাকায়। এখন বিক্রি করছি ৩৫০ টাকায়। দাম আর বাড়বে কি না, জানি না। যদি সরবরাহ কম থাকে, তাহলে দাম বাড়বে। আর সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে। তবে এখন আলুর মৌসুম শেষের দিকে, যার কারণে দাম না কমার শঙ্কাই বেশি। নতুন আলু বাজারে উঠতে এখনো দেড়-দুই মাস সময় লাগবে বলেও জানান এ বিক্রেতা।
জাহিদ হোসেন নামের এক ক্রেতা বলেন, আলুর দাম মাঝে কমেছিল কিছুটা। দাম আরও কমবে, এই আশায় তখন কিনিনি। কিন্তু এখন দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
মিরসরাই পৌর বাজারে নুরুল ইসলাম নামে ক্রেতা বলেন, সকালে ভ্যানে করে ৭৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখলাম। ভ্যানে যদি দাম ৭৫ টাকা হয়, তাহলে দোকানে কত হবে? আর সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? আমরা ভেবেছিলাম, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাজার ব্যবস্থার উন্নতি হবে। কিন্তু দাম আরও বেড়ে গেছে।
মিরসরাই উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত চক্রবর্তি জানান, শীঘ্রই বাজারে গিয়ে মনিটরিং করবো। কেনা দামের চেয়ে যদি অতিরিক্ত বেশী দামে বিক্রি হয় তাহলে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এমজে/