করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে দেড় মাসেরও বেশি সময় দূরপাল্লার গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। আজ সোমবার থেকে দূরপাল্লার বাস, ট্রেন ও লঞ্চ চালুর অনুমতি দিয়েছে সরকার। সে অনুযায়ী আজ সকাল থেকেই দূরপাল্লার বাস ও ট্রেন চলতে দেখা গেছে।
গতকাল রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব রেজাউল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে চলমান বিধিনিষেধ আগামী ৩০ মে পর্যন্ত আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। তবে এই বিধিনিষেধের মধ্যে সব ধরনের গণপরিবহন অর্ধেক আসন খালি রাখার শর্তে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, আন্তঃজেলাসহ সব ধরনের গণপরিবহন আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে পারবে। তবে অবশ্যই যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে মাস্ক পরিধান এবং সবধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।
এদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি সরকারি নির্দেশনা মেনে বাস মালিকদের গণপরিবহন চালানোর আহ্বান জানিয়েছে। সমিতি এক চিঠিতে জানিয়েছে, সরকার নির্ধারিত শর্তে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চালাতে হবে। মাস্ক ছাড়া কোনো যাত্রী ওঠানো যাবে না। চালক, কন্ডাক্টর, হেলপার, টিকিট বিক্রিতে নিয়োজিত ব্যক্তিকে মাস্ক পরতে হবে। টিকিট কাউন্টারে সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে।
গত মার্চে করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার পর গণপরিবহনে অর্ধেক আসন খালি রাখার নির্দেশ দেয় সরকার। এ কারণে গত ৩০ মার্চ বাসের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। সে অনুযায়ী নগর পরিবহনে ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। আজ থেকে চালু হওয়া দূরপাল্লার গণপরিবহনও ৬০ শতাংশ হারে ভাড়া বেশি নেবে।
এদিকে রেল সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ে স্টেশন ও ট্রেনের বগিগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। দীর্ঘ ৪৯ দিন ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার পর ইঞ্জিনগুলো ঠিক আছে কিনা তাও পরীক্ষা করা হয়েছে। আজ থেকে দেশজুড়ে ২৮ জোড়া (৫৬টি) আন্তঃনগর ট্রেন এবং নয় জোড়া মেইল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল করবে। প্রতিটি ট্রেনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করবে।
রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন গতকাল রোববার জানিয়েছেন, গত ১৪ মাস ধরে রেলে করোনার থাবা পড়ছে। প্রায় ৪ মাস ট্রেন পুরোপুরি বন্ধ ছিল। বাকি সময় কিছু কিছু ট্রেন ৫০ শতাংশ সিট ফাঁকা রেখে চালানো হয়েছে। মাসে প্রায় পৌনে ২শ’ কোটি টাকার রাজস্ব হারাতে হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সীমিত পরিসরে আজ ট্রেনে যাত্রী পরিবহণ শুরু হবে। কোনো অবস্থাতেই মাস্ক ছাড়া যাত্রীদের স্টেশনে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
সোমবার সকাল ৮টায় রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে সিলেটের উদ্দেশে ‘পারাবত এক্সপ্রেস’ এবং চট্টগ্রামের উদ্দেশে ‘মহানগর প্রভাতী এক্সপ্রেসকে’ ছেড়ে যেতে দেখা গেছে। তবে দুটি ট্রেনই ছিল বেশ ফাঁকা।
অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন সূত্রে জানা গেছে, আজ সোমবার থেকে সব রুটে লঞ্চ-স্টিমার চালু হবে। সদরঘাট থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছেড়ে যাবে নৌ-পরিবহন।