শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। এ বছর পাসের হার বৃদ্ধি পেয়েছে ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ছাত্রের চেয়ে ১৫ হাজার ৪২৩ জন বেশি ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে। এবার ফলাফলে সারাদেশে মোট পাস করেছে ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন।
রোববার (১২ মে) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮৩ দশমিক ৪ শতাংশ। এরমধ্যে মেয়ে শিক্ষার্থীদের পাসের হার ৮৪ দশমিক ৪৭ ও ছেলে শিক্ষার্থীদের পাসের হার ৮১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। উত্তীর্ণ মোট ছাত্রের চেয়ে ৫৯ হাজার ৪৭ জন বেশি ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে। এছাড়া ছাত্রের চেয়ে ১৫ হাজার ৪২৩ জন বেশি ছাত্রী জিপিএ ৫ পেয়েছে। গতবারের তুলনায় এবার জিপিএ-৫ এর সংখ্যা কমেছে ১ হাজার ৪৪৯ জন।
প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী— ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৮৩ দশমিক ৯২ শতাংশ, বরিশালে ৮৯ দশমিক ১৩ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৮২ দশমিক ৮০ শতাংশ, কুমিল্লায় ৭৯ দশমিক ২৩ শতাংশ, দিনাজপুরে ৭৮ দশমিক ৪০ শতাংশ, রাজশাহীতে ৮৯ দশমিক ২৬ শতাংশ, সিলেটে ৭৩ দশমিক ০৪ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৮৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ ও যশোরে ৯২ দশমিক ৩২ শতাংশ। আর মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ এবং কারিগরিতে পাসের হার ৮১.৩৮ শতাংশ।
নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৬ লাখ ৬ হাজার ৩৯৪ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৩ হাজার ৪৫ হাজার ৬৭৮ জন। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৬৩ হাজার ৮৪৫ শিক্ষার্থী।
মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষার্থী ছিল দুই লাখ ৮৪ হাজার ৬৬৫ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ২ লাখ ২৬ হাজার ৭৫৪ শিক্ষার্থী। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪ হাজার ২০৬ জন। কারিগরি বোর্ডের মোট পরীক্ষার্থী ছিল এক লাখ ২২ হাজার ৫৩৮ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ৯৯ হাজার ৭২১ শিক্ষার্থী। জিপিএ-৫ পেয়েছে চার হাজার ৭৮ জন।
কমেছে জিপিএ-৫
২০২৪ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। গতবার (২০২৩ সালে) পাসের হার ছিল ৮০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। অর্থাৎ গতবারের তুলনায় এবার পাসের হার বেড়েছে ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ। বিপরীতে চলতি বছরে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা গেছে।
তথ্য বিশ্লেষণ করে আরও দেখা যায়— ২০২৩ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিল এক লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন। চলতি বছরে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী কমেছে এক হাজার ৪৪৯ জন।
এবার ছাত্রদের পাসের হার ৮১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ছাত্রীদের পাসের হার ৮৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ। নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৮৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
খাতা চ্যালেঞ্জ করা যাবে সোমবার থেকে
প্রকাশিত ফলাফলে কারও কাঙ্ক্ষিত ফল না এলে সে পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন বা খাতা চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন। এ কার্যক্রম শুরু হবে সোমবার (১৩ মে) থেকে, চলবে ১৯ মে পর্যন্ত।
আন্তঃশিক্ষাবোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর তপন কুমার সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগামীকাল সোমবার থেকে পুনর্নিরীক্ষণ আবেদন শুরু হবে, চলবে ১৯ মে পর্যন্ত।
তিনি জানান, ফলাফলে কেউ সংক্ষুব্ধ বা অসন্তুষ্ট হলে তিনি চাইলে পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবেন। অনলাইনে মাধ্যমে ঘরে বসেই তিনি এ আবেদন করতে পারবেন। পরে বোর্ড তার খাতা যাচাই বাছাই করে দেখে আবেদন নিষ্পত্তি করবেন।
যেভাবে আবেদন করতে হবে
শুধুমাত্র টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইল ফোন থেকে পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করা যাবে। আবেদন করতে মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে RSC <Space> বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর <Space> রোল নম্বর <Space> বিষয় কোড লিখে Send করতে হবে 16222 নম্বরে।
ফিরতি এসএমএ-এ আবেদন বাবদ কত টাকা কেটে নেওয়া হবে তা জানিয়ে একটি পিন দেওয়া হবে। এতে সম্মত থাকলে মেসেজ অপশনে গিয়ে RSC <Space> Yes <Space> PIN <Space> Contact Number (যে কোনো অপারেটর) লিখে Send করতে হবে 16222 নম্বরে।
ফল পুনর্নিরীক্ষণে ক্ষেত্রে একই এসএমএস-এর মাধ্যমে একাধিক বিষয়ের জন্য আবেদন করা যাবে। সে ক্ষেত্রে কমা (,) দিয়ে বিষয় কোড আলাদা লিখতে হবে। যেমন ঢাকা বোর্ডের একজন শিক্ষার্থী বাংলা ও ইংরেজি দুটি বিষয়ের জন্য টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে লিখবে RSC <Space> Dha <Space> Roll Number <Space) 101, 102, 107, 108। ফল পুনর্নিরীক্ষণে প্রতিটি পত্রের জন্য ১২৫ টাকা করে কেটে নেওয়া হবে।
এমজে/