দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে জাতীয় পার্টি ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি বাংলাদেশের কোনো লোক যদি বলতে পারে আমি বা চেয়ারম্যান কারও কাছ থেকে টাকা নিয়েছি দলের জন্য বা পার্টিকে দেওয়ার জন্য তাহলে আমি পদত্যাগ করব।
আজ সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এ চ্যালেঞ্জ জানান চুন্নু। এর আগে রোববার নির্বাচনে ভরাডুবি, অনিয়মসহ নানা অভিযোগে জাপার পরাজিত প্রার্থীরা বিশেষ সভা করেন। সেখানে তারা অভিযোগ করেন ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে হাইকমান্ড।
এ বিষয়ে চুন্নু বলেন, এইগুলো হলো গসিপিং। অনেকেই মনে করেছে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যেহেতু আমাদের কথাবার্তা হয়েছে, ২৬টা সিট দিয়েছে। তাদের ধারণা আমাদের অনেক টাকা দিয়েছে। শত শত কোটি টাকা দিয়েছে, প্রার্থীদের কেন আমরা টাকা দিলাম না। এটা তাদের মনের আসল ব্যথা। ইলেকশন ঠিকমত হয় নাই, তারা পাস করে নাই এইটা আসল ব্যথা না। দুই একজন ছাড়া বাকিদের আসল ব্যথা আমরা শত কোটি টাকা পেয়েছি, তাদের দেই নাই।
চুন্নুর প্রশ্ন, শত কোটি টাকা কে দেবে? সরকার আমাকে টাকা দেবে কেন? সরকার যদি আমাকে টাকা দেয় তাহলে এটা জানার বাকি থাকবে?
রোববার বিশেষ সভায় চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের সমালোচনা করায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু এবং কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও সিলেট-২ আসনের জাপার প্রার্থী ইয়াহ ইয়া চৌধুরীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে চুন্নু বলেন, গতকাল রাতে যে দুই জনকে অব্যাহতি দিয়েছি। তাদের বক্তব্য আপনারা শুনেছেন, জনসম্মুখে তারা বক্তব্য দিয়েছেন। একটা সংগঠনের নেতা হয়ে এ ধরনের বক্তব্য পাবলিকলি দেওয়া সংগঠন বিরুদ্ধ, অমার্জনীয় কাজ। তার জন্য চেয়ারম্যান তাদের অব্যাহতি দিয়েছে। তারা এগুলো ব্যক্তিগত ভাবে বলতে পারতো। সেখানে অনেক সিনিয়র নেতা ছিলেন তারা এই ধরনের বক্তব্য দেন নাই।
তারা গুরুতর সাংগঠনিক অপরাধ করেছেন জানিয়ে চুন্নু বলেন, ইয়াহ ইয়া সিলেট সিটি করপোরেশন ভোটে নৌকার প্রার্থীর জন্য ভোট চেয়েছিলেন। তাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তিনি ক্ষমা চাইলে তাকে আবার দলে আনা হয়। এই ছেলেটার দলের প্রতি কোনো আনুগত্য কখনোই ছিল না। সেন্টু দলের পুরোনো কর্মী। সন্দেহ নাই সে দলের ভালো কর্মী ছিল। গতকাল সে আবেগের বশবর্তী হোক, যে কোনো কারণে যে ধরনের কথা বলেছে পাবলিকলি, সেখানে যদি সংগঠনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তাহলে সাংগঠনিক কাঠামো ঠিক রাখা যাবে না।
তিনি বলেন, নির্বাচনের সফলতা-ব্যর্থতার দায় জাপা চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের ওপর আসে। সেই দায়ভার নিতেও আমরা রাজি ছিলাম। তার মানে এই না, পাবলিকলি এই ধরনের কথা বলবে। সেন্টু তার আসনে নৌকা আছে বলে আগেই জানিয়েছিল সে ভোট করবে না। সে করেও নাই। যে লোকটা ভোট চায় নাই, সে তো এরকম অভিযোগ করতে পারে না। ইয়াহ হিয়া সামান্য ভোট পেয়েছে। উল্লেখ করার মতো না। ২০১৮ সালে নৌকা ছিল না, তখনও সে জামানত হারিয়েছে। মিলন ইলেকশন করে নাই, সে হাজী সেলিমের ছেলেকে সাপোর্ট দিয়েছে।
এমজে/