রাজধানীর তেজগাঁও রেলস্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মা ও শিশুসন্তানসহ চার যাত্রী মারা গেছেন।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোর ৫টার দিকে ট্রেনটিতে আগুন দেয় দুর্বত্তরা। এতে ঘটনাস্থলেই দগ্ধ হয়ে চারজন মারা যান। তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে পাঠানো হয়।
কমলাপুর রেলওয়ে থানার পরিদর্শক মো. ফেরদৌস বলেন, তেজগাঁও স্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে ঘটনাস্থলেই চারজন মারা গেছেন। তাদের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নিহতদের মধ্যে নাদিয়া ও তার শিশুসন্তান ছাড়া অন্য দুজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। নাদিয়ার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায়। তার বাবার নাম ফজলুর রহমান। তেজগাঁও তেজকুনিপাড়ায় স্বামী মিজানুর রহমানের সঙ্গে থাকতেন তিনি।
যাত্রীদের বরাতে জানা গেছে, ট্রেনটি খিলক্ষেতে এলে যাত্রীরা বগিতে আগুন দেখতে পান। তারা চিৎকার শুরু করলে চালক ট্রেনটি তেজগাঁও স্টেশনে থামান। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভাতে কাজ শুরু করে।
নিহত চারজনের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। তাদের মধ্যে তিনজনের নাম জানা গেছে।
তারা হলেন- নদিরা আক্তার পপি (৩৫), তার ৩ বছরের ছেলে ইয়ামিন এবং মো. আক্তার (৪০)। অজ্ঞাত পরিচয় এক পুরুষের লাশ মর্গে রয়েছে।
রেলওয়ে পুলিশের ঢাকা অঞ্চলের সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, তারা এ ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক নাশকতা’ হিসেবেই সন্দেহ করছেন।
তিনি জানান, ট্রেনের দুই বগির সংযোগস্থলে প্রথমে আগুন দেখতে পান রেলওয়ে স্টাফরা। তারা ফায়ার এক্সটিংগুইশার দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশাপাশি দুটি কোচে।
এ সময় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিলে অনেকে হুড়োহুড়ি করে নামার চেষ্টা করেন। আবার ভোরের ঘুম ঘুম পরিবেশে অনেকে শুরুতে বুঝতেই পারেননি কী ঘটতে যাচ্ছে।
ওই সময় ট্রেন থেকে নামতে গিয়েও কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মাথায় আঘাত পাওয়া একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত ওই ব্যক্তির নাম নুরুল হক ওরফে আব্দুল কাদের (৫৩)। নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় তার বাড়ি। ঢাকায় তিনি হামীম গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের পরিবহন শাখায় প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত।
এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বর ভোরে জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ রেলপথে লাইন কেটে ফেলায় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে একজন নিহত ও কয়েকজন আহত হন।
এমজে/