ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় টানা হামলা চালাতে থাকা ইসরায়েল এতদিন ধরে যুদ্ধবিরতি নিয়ে যে একরোখা অবস্থান জানিয়ে আসছিল, তা থেকে কিছুটা সরে এসেছে। জয়ী না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এখন বলছেন, জিম্মিদের মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি নয়।
সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সোমবার তিনি ওই প্রসঙ্গে কথা বলেন বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজায় হামাসের হাতে জিম্মি হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত কোনো যুদ্ধবিরতি বা সাধারণ যুদ্ধবিরতি পর্যন্ত হবে না। অবশ্য কৌশলগত কারণে এখানে-সেখানে ঘণ্টা খানেকের মতো বিরতি তো দেয়া হয়েছেই।
তিনি বলেন, আমি মনে করি পণ্য বা মানবিক সহায়তা আসতে কিংবা আমাদের জিম্মিদের মুক্তির জন্য পরিস্থিতি পরীক্ষা করব। তবে আমি মনে করি না সাধারণ যুদ্ধবিরতি হবে।
এর আগে গত মাসের শেষ দিকে যুদ্ধবিরতি দেয়া নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, যুদ্ধবিরতি হলো হামাসের কাছে আত্মসমর্পণের সমতুল্য।
তেল আবিবে এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু তখন বলেন, ইসরায়েল সামরিক তৎপরতা বন্ধ করবে না, যেমন যুক্তরাষ্ট্র পার্ল হারবারে বোমা হামলা বা ৯/১১ এর সন্ত্রাসী হামলার পর যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবে না।
ইসরায়েলের প্রধানমমন্ত্রী বলেন, ‘ইসরায়েল এই যুদ্ধ শুরু করেনি। ইসরায়েল এই যুদ্ধ চায়নি। কিন্তু ইসরাইল এই যুদ্ধে জয়ী হবে।
তার আগে হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ দ্বিতীয় ধাপে গড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেন নেতানিয়াহু। জাতির উদ্দেশে দেয়া টেলিভিশন ভাষণে তিনি বলেন, ‘এ পর্যায়ে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ দীর্ঘ ও কঠিন হবে।’
তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের দেশের জন্য দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধ। এ অভিযান সহজ নয়। তবে আমরা প্রস্তুত।’
ইসরায়েলে ঢুকে হামাস গত ৭ অক্টোবর আকস্মিক হামলা চালায়। ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় টানা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামলা শুরুর পর ৯ অক্টোবর গাজায় সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।
টানা হামলার শিকার গাজায় খাবার, পানি, ওষুধ ও জ্বালানির সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় সম্প্রতি মিশরের রাফা ক্রসিং দিয়ে কয়েকটি ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকেছে ওই উপত্যকতায়। তবে জ্বালানি প্রবেশে ইসরায়েল অনুমতি না দেয়ায় ভয়াবহ বিপর্যস্ত অবস্থায় আছে গাজা।
এমজে/