দীর্ঘদিন রোগে ভুগে অবশেষে মারা গেলো চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার সিংহী নোভা। বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতার কারণে দীর্ঘ এক বছর অসুস্থ ছিল বন্দরনগরীর চিড়িয়াখানায় জন্ম নেয়া প্রাণীটি। মৃত্যুকালে এটির বয়স হয়েছিল ১৮ বছর।
শনিবার সকালে চিড়িয়াখানায় সিংহীটি মারা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর শাহাদাত হোসেন শুভ।
তিনি বলেন, সাধারণত একটি সিংহের গড় আয়ু ১৫ থেকে ১৭ বছর। সিংহী নোভার বয়স হয়েছিল ১৮ বছর চার মাস। কিন্তু বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতার কারণে দীর্ঘ এক বছর অসুস্থ ছিল প্রাণীটি। এর মধ্যে ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে গত ১৭দিন ধরে সিংহীটি খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল। পরে ওষুধ ও স্যালাইন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল। অবশেষে শনিবার সকালে সে মারা গেছে।
ময়নাতদন্ত শেষে সিংহীটিকে চিড়িয়াখানায় মাটি চাপা দেয়া হবে বলেও জানান শুভ।
২০০৫ সালের ১৬ জুন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় জন্ম নেওয়া দুটি সিংহীর নাম রাখা হয় ‘বর্ষা’ আর ‘নোভা’। তাদের জন্মের কিছুদিন পর তাদের মা ‘লক্ষ্মী’ এবং ২০০৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাবা ‘রাজ’ মারা যায়।
প্রায় ১১ বছর নিঃসঙ্গ কাটানো ‘নোভার’ জন্য সঙ্গী আনার উদ্যোগ নিল চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। পরে ২০১৬ সালে অদল-বদল প্রক্রিয়ায় ‘বর্ষাকে’ রংপুরে পাঠিয়ে সেখান থেকে আনা হয় সিংহ ‘বাদশাহ’কে।
ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর বাদশাহকে চট্টগ্রামে এনে কিছুদিন আলাদা খাঁচায় রাখা হয়। ২২ সেপ্টেম্বর সিংহ এবং সিংহীকে এক খাঁচায় দেয়ার সময় বেশ ধুমধামের আয়োজন করে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। সিংহ-সিংহীর ‘বিয়ে’ বলে প্রচার করা হয় ওই আয়োজনকে, যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়।
গতবছরের ১১ নভেম্বর বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যায় বাদশা। এরপর প্রায় এক বছর আবার নিঃসঙ্গ ছিল নোভা।
সিংহ-সিংহী আড়াই বছর বয়সেই প্রজননক্ষম হয় এবং তিন বছরের মধ্যে প্রথম বাচ্চা প্রসব করে। ১২ বছর পর এ প্রাণীগুলোর প্রজনন ক্ষমতা আর থাকে না। এর মধ্যে সেগুলো সর্বোচ্চ পাঁচবার শাবকের জন্ম দেয়।
এমজে/