ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে একটি বহুতল আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত তিনটি শিশু রয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৩৭ জন। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিতে বিগত ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী অগ্নিকাণ্ড এটি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে ১০তলা ভবনটির পার্কিং ফ্লোরে আগুনের সূত্রপাত হয়। সেখানে অনেকগুলো মোটরসাইকেল পার্ক করা ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, অগ্নিনিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘনের সন্দেহে ভবনটির মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
হোয়া নামে এক নারী প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, সাহায্যের জন্য অনেকের চিৎকার শুনতে পাচ্ছিলাম। কিন্তু আমাদের বেশি কিছু করার ছিল না।
তিনি বলেন, ভবনটি এতটাই আবদ্ধ যে, পালানোর কোনো রাস্তা ছিল না। ফলে ভুক্তভোগীদের বেরিয়ে আসা অসম্ভব ছিল।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিওতে ভবনটিতে দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে ও ধোঁয়ার কুণ্ডলী বের হতে দেখা গেছে।
বুধবার সকালের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও ভবনটি সরু গলির মধ্যে অবস্থিত হওয়ায় উদ্ধারকারীদের কাজ করতে বেশ বেগ পেতে হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণের পর ভবনের নিচতলায় বেশ কিছু পুড়ে যাওয়া মোটরসাইকেল দেখতে পাওয়া যায়।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভবনটিতে প্রায় ১৫০ জন মানুষ বসবাস করতেন।
হুয়োং নামে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আগুন থেকে বাঁচতে ভবনের একটি উঁচু তলা থেকে এক শিশুকে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছিল।
তিনি বলেন, সবখানে ধোঁয়া ছিল। ওপরের একটি তলা থেকে এক শিশুকে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছিল। আমি জানি না সে বেঁচে রয়েছে কি না। যদিও মানুষজন তাকে ধরতে একটি ম্যাট্রেস ব্যবহার করেছিল।
বুধবারই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন। ঘটনা সঠিকভাবে তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভিয়েতনামে বেশ কয়েকটি প্রাণঘাতী অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কয়েকটি ঘটেছে বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে।
এক বছর আগে বাণিজ্যকেন্দ্র হো চি মিন শহরে একটি কারাওকে বারে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৩২ জন প্রাণ হারান, আহত হয়েছিলেন ১৭ জন। পরে ভবনটির মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
ওই ঘটনার পরেই উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ সব ভেন্যু পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দিয়েছিলেন ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী।
তার আগে, ২০১৮ সালে হো চি মিন শহরে একটি বহুতল ভবনে আগুন লেগে ১৩ জন মারা যান। ২০১৬ সালে হ্যানয়ে একটি কারাওকে ভেন্যুতে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান আরও ১৩ জন।
এমজে/