জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে বিশ্ব বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছে। গত বছর সংঘাতে আটকে পড়া মানুষের সংখ্যা এবং সংঘাতজনিত তাদের মানবিক বিপর্যয় আকাশ ছুঁয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব মঙ্গলবার এ কথা বলেন।
জাতিসংঘের হিসাবে ২০২২ সালে আগের বছরের তুলনায় বেসামরিক লোকের মৃত্যু ৫৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, ১২টি সংঘাতে প্রায় ১৭ হাজার বেসামরিক লোকের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে।
ইউক্রেন ও সুদানে বেসামরিক লোকের মৃত্যু, ইথিওপিয়ায় স্কুল ধ্বংস করা এবং সিরিয়ায় পানির অবকাঠামোর ক্ষতির উল্লেখ করে গুতেরেস জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘বিশ্ব বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে অন্তর্ভুক্ত তার প্রতিশ্রুতি পালন করতে ব্যর্থ হচ্ছে।’
রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজয়ার পাশে বসে থাকা গুতেরেস বলেছেন, যুদ্ধ অঞ্চলের বেসামরিক নাগরিকদের চিকিৎসার বিষয়ে জাতিসংঘের গবেষণায় দেখা গেছে। গত বছর জনবহুল এলাকায় ‘বিস্ফোরক অস্ত্র’ ব্যবহারের শিকার ৯৪ শতাংশ বেসামরিক নাগরিক ছিল। এছাড়া যুদ্ধ এবং নিরাপত্তাহীনতার কারণে ১১ কোটি ৭০ লক্ষেরও বেশি মানুষ প্রাথমিকভাবে তীব্র ক্ষুধার মুখোমুখি হয়েছে।’
শুধু ইউক্রেনে, যেটি বছরের বেশি সময় ধরে রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। জাতিসংঘ প্রায় ৮ হাজার বেসামরিক লোকের মৃত্যু এবং ১২ হাজার ৫০০ জনের বেশি আহতের রেকর্ড করেছে, যদিও প্রকৃত পরিসংখ্যানে এই সংখ্যা সম্ভবত আরও বেশি।
জাতিসংঘের প্রধান, বিশ্বব্যাপী, ‘সংঘাত, সহিংসতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং নিপীড়নের কারণে’ তাদের বাড়ি থেকে বাধ্য হয়ে বিতাড়িত শরণার্থীর সংখ্যা ১০ কোটিতে পৌঁছেছে।
এ ছাড়া মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদের সামনে বক্তব্য রাখছিলেন রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির সভাপতি মির্জানা স্পোলজারিক। তিনি সদস্যদের বলেন, ‘আমরা দেখছি, বিশ্বজুড়ে সংঘাতে অগণিত বেসামরিক মানুষ একটি জীবন্ত নরকের সম্মুখীন হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘যে কোনো মিনিটে, পরবর্তী ক্ষেপণাস্ত্র তাদের বাড়ি, তাদের স্কুল, তাদের ক্লিনিক এবং সেখানে থাকা সবাইকে ধ্বংস করে দিতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘যে কোনো সপ্তাহে, তাদের খাবার বা ওষুধ ফুরিয়ে যেতে পারে।’
গত মে মাসে কাউন্সিলের ঘূর্ণায়মান সভাপতিত্ব গ্রহণকারী সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালাইন বারসেট বলেছেন, সংঘাতের সব পক্ষকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলতে হবে।
এমজে/