স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা চলছে অনেক আগে থেকেই। এবার সেই তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র হলো ব্রিটেন। দ্বীপরাষ্ট্রটিতে যে কোনো ধরনের হামলার বিষয়ে চীনকে সতর্ক করেছে যুক্তরাজ্য সরকার।
আল জাজিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার বেইজিংকে সতর্ক করেছে ব্রিটেন বলেছে, তারা যদি আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়, তা হলে তা অভ্যন্তরীণ এবং বিশ্বব্যাপী বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ঝুঁকি তৈরি করবে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি দেশটির বৈদেশিক নীতি বিষয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, সার্বভৌমত্বের যেসব দাবি, সেগুলোতে শান্তিপূর্ণ সমাধান দেখতে চায় লন্ডন।
চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শান্তিকালীন সময়ে সবচেয়ে বড় সামরিক সমাবেশ বলতে বেইজিং কী বোঝাতে চায়, সেটা তাদের স্পষ্ট করা উচিত। তা না হলে বড় ধরনের ভুল বোঝাবুঝি হয়ে যেতে পারে।
জেমস ক্লেভারলি সতর্ক করে বলেন, তাইওয়ান প্রণালীতে যে কোনো ধরনের সংঘাত বিশ্বের সাপ্লাই চেইনে, বিশেষ করে উন্নত সেমি-কন্ডাক্টরগুলোর ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওই অঞ্চলে যে কোনো ধরনের যুদ্ধ-সংঘাত শুধু মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে না, বরং তা ২ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ডলারের বিশ্ব বাণিজ্যকে ধ্বংস করবে। এর ফলে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে তা থেকে কোনো দেশই নিজেকে রক্ষা করতে পারবে না।
প্রসঙ্গত, চীন স্বায়ত্তশাসিত তাইওয়ানকে নিজেদের মূল ভূখণ্ডের অংশ বলে মনে করে। বিপরীতে তাইওয়ান নিজেকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করে। শুরু থেকেই তাইওয়ানের দাবির পক্ষে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থন দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে তাইওয়ান ইস্যুতে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয় গত বছর, যখন মার্কিন পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষের তৎকালীন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ভূখণ্ডটি সফর করেন। কারণ তিনিই ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো শীর্ষ ব্যক্তি যিনি চীনের দাবি করা ভূখণ্ড সফর করেন। স্বাভাবিক কারণেই বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয়নি বেইজিং।
এক পর্যায়ে খোদ চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং অভিযান চালিয়ে তাইওয়ানকে চীনা ভূখণ্ডের সঙ্গে অন্তর্ভুক্তকরণের ঘোষণা দেন। এমনকি সম্প্রতি তাইওয়ানের চতুর্দিকে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে চীন। সেই সঙ্গে তাইওয়ানের আকাশে চক্কর দেয় চীনা বিমান।
পশ্চিমা মিডিয়া ও বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, দ্বীপরাষ্ট্রটিকে নিজেদের সঙ্গে একীভূত করতে যে কোনো সময় অভিযান পরিচালনা করতে পারে চীন। যেমনটা ইউক্রেনে করছে রাশিয়া। এমন প্রেক্ষাপটেই বেইজিংকে হুশিয়ার করলেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এমজে/