১৪ বছরে যা হয়েছে, ২৯ বছরেও তা হয়নি: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেক সংগ্রামের পথ বেয়ে আমরা দেশ পেয়েছি, জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা পেয়েছি এবং গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে পেরেছি বলেই আজকে আমরা উন্নত জাতি গড়তে পেরেছি।

আজকের বাংলাদেশ গত ১৪ বছরে যে উন্নতি করেছে, যেটি দীর্ঘ ২৯ বছরে হয়নি। আমরা চাই বাংলাদেশ আরও উন্নত হোক।

মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাস উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সশস্ত্র বাহিনী গড়ে উঠেছে। স্বাধীন সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলা, গরিব দেশে শক্তিশালী বাহিনী গড়ে তোলা ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লক্ষ্য। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৪ সালে প্রতিরক্ষা নীতিমালা তৈরি করে যান তিনি। সেই নীতিতে আমরা ফোর্স গঠন করে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।

সেনাবাহিনীর উন্নয়ন তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্বিন্যাস করেছি। সিলেট, রামু ১০ পদাতিক প্রতিষ্ঠা করেছি। এ ছাড়া বিভিন্ন ফরমেশনের অধীন তিনটি ব্রিগেড, ৫৮টি ইউনিট প্রতিষ্ঠা করেছি।

নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতুর মাওয়া জাজিরায় নিরাপত্তার লক্ষ্যে সেনানিবাস প্রতিষ্ঠা করেছি। রাজবাড়ী ও ত্রিশালে নতুন দুটি সেনানিবাসের কার্যক্রম চলছে। সর্বোপরি সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নে সর্চোচ্চ কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর জন্য জাহাজ, হেলিকপ্টার, চতুর্থ প্রজন্মের ট্যাংক ক্রয় করেছি।

তিনি আরও বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সরঞ্জামাদি ও আধুনিক যানমালও ক্রয় করেছি। পাশাপাশি সেনাবাহিনীতে আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামাদি যুক্ত করা হয়েছে। সেনাসদস্যদের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণ, বাসস্থানসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

শুধু তাই নয়, আমাদের বাঙালির ভাতের অভ্যাস, একসময় দুপুরে ভাত দেওয়া হতো না। আওয়ামী লীগ সরকার এসে সৈনিকদের ভাতের ব্যবস্থা করেছে। আবদুল হামিদ সেনানিবাস তৈরির মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলের মানুষের উন্নয়ন হবে।

হাওরাঞ্চলের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিঠামইন এলাকায় অধিকাংশই হাওরাঞ্চল। বর্ষাকালে ছোট ছোট দ্বীপের মতো হযে যায়। যদিও শীতকালে এসে বোঝার উপায় নেই। ফুলে ফলে ভরে গেছে এ অঞ্চল। অথচ বর্ষাকালে বিপরীত চিত্র দেখা যায়। এ অঞ্চলের মানুষের প্রতিনিয়ত লড়াই করে বাঁচতে হয়।

এ সময় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ভূয়সী প্রশংসা করে সরকারপ্রধান বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ ১৯৭০ সাল থেকে প্রতিটি নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। জনগণের সেবা করে গেছেন। এই দুর্গম অঞ্চলের মানুষের পাশে থাকা এবং সুখ-দুঃখের অংশী হওয়া, ভাগ্য পরিবর্তনে নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

এ অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের জন্য তার নামে সেনানিবাস করেছি। মহামান্য রাষ্ট্রপতি যখন যেটি দায়িত্ব পেয়েছেন, তখন সেটি নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে স্বাধীনতা বিধ্বস্ত দেশকে এগিয়ে নেওয়ায় তার অবদান অপরিসীম।

শেখ হাসিনা বলেন, হাওরাঞ্চলের রাস্তাঘাট অনেক উন্নত হয়েছে। আমি ইতোমধ্যে নির্দেশ দিয়েছি হাওর ও বিল এ অঞ্চলের প্রতিটি রাস্তা হবে এলিভেটেড। যাতে বর্ষাকালে পানি চলাচল করতে পারে।

এতে মানুষের চলাচল, পানি ও নৌকা চলাচল ঠিক থাকবে। এই সেনানিবাস থেকে ঢাকা-সিলেট যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

এমজে/

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img