আমাদের প্রতিদিনের খাবারে ব্যবহৃত এক অন্যতম উপাদান হল পেঁয়াজ। আর সেই পেঁয়াজেরই সংকট দেখা দিয়েছে বিশ্বের একাধিক দেশে। ফলে বাজারে অন্যান্য সবজিরও বাড়ছে দাম। এর জেরে বিশ্বে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে বলে সর্তক করেছে জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংক।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে অনুযায়ী, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় এখনও বেড়ে চলেছে পেঁয়াজের দাম। বাড়ছে সামগ্রিক মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনাও। ফিলিপাইনের নাগরিকরা ইতিমধ্যেই রান্নার উপকরণের তালিকা থেকে পেঁয়াজ বাদ দিতে শুরু করে দিয়েছেন। দাম এতটাই বেড়েছে যে এগুলির দাম মাংসের চেয়ে বেশি হয়ে গিয়েছে। কিছু বিমান কর্মী মধ্যপ্রাচ্য থেকে এইসব সামগ্রী চোরাচালান করতে গিয়ে ধরাও পড়েছিল।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রতিকূল জলবায়ু থেকে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরস্থিতি সহ বেশ কয়েকটি কারণে পেঁয়াজের এই সংকট দেখা দিয়েছে। গত বছর পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যা, মধ্য এশিয়ায় তুষারপাত এবং ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ এগুলির মধ্যে প্রধান। উত্তর আফ্রিকাতেও তীব্র খরা এবং বীজ ও সারের উচ্চ মূল্যের কারণে পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। মরোক্কোতে পেঁয়াজ চাষিরা খারাপ আবহাওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।
মরক্কো, তুরস্ক ও কাজাকস্তানের মতো দেশগুলো তাই পেঁয়াজের সরবরাহ অবিচ্ছিন্ন রাখতে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। কাজাকস্তানে পেঁয়াজের এতটাই আকাশছোঁয়া দাম যে কর্তৃপক্ষ কৌশলগতভাবে পেঁয়াজ মজুত করতে বাধ্য হয়েছে। সেদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী স্থানীয় সুপারমার্কেটগুলিতে সরবরাহ সুরক্ষিত করার জন্য জনগণকে পেঁয়াজের বস্তা না কেনার আহ্বান জানিয়েছেন।
এছাড়াও কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান এবং তাজিকিস্তান থেকে পেঁয়াজ রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এমনকী আজারবাইজানও বিক্রির সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে।
এদিকে, পেঁয়াজের ঊর্ধ্বমুখী দামে নাজেহাল দেশগুলোর ক্রেতারা। পেঁয়াজের কারণে পকেটে টান পড়ছে মধ্যবিত্তদের। কারণ পেঁয়াজের সংকট ও দামবৃদ্ধির কারণে গাজর, টম্যাটো, আলু, আপেলের মতো ফল ও সবজিরও দাম বেড়েছে। জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংকের মতে, বিশ্ব জুড়ে অন্যান্য সবজির সরবরাহেও পড়েছে প্রভাব।
উল্লেখ্য, বিশ্বের সবথেকে বেশি ব্যবহৃত সবজি হল পেঁয়াজ। সালাড থেকে তরকারি সব জায়গাতেই এর ব্যবহার। বছরে প্রায় ১০৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় সারা বিশ্বে। যা বছরে গাজর, কাঁচা মরিচ, শালগম, গোলমরিচ ও রসুনের সম্মিলিত মোট উৎপাদনের সমান।
এমজে/