ভয়াবহ ভূমিকম্পের ফলে ধ্বংসস্তূপে এখনও উদ্ধার কাজ চলছে। এরই মধ্যে তুরস্কের বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তুরস্কের নিরাপত্তা বাহিনী এমন অভিযোগে ৪৮ জনকে আটকও করেছে।
আটক হওয়া দুইজন নিজেদের ত্রাণকর্মী হিসেবে পরিচয় দেন। অভিযোগ উঠেছে, তারা দক্ষিণ হাতায় প্রদেশে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৬ ট্রাকভর্তি খাবার লুট করার চেষ্টা করছিলেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোয়ান গত শনিবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বলেন, এই বিপর্যয়ের মধ্যে কেউ অরাজকতা করার চেষ্টা করলে তাদের আটক করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এদিকে, জার্মান উদ্ধারকারী টিম ও অস্ট্রিয়ান সেনাবাহিনীর সদস্যরা শনিবার অনুসন্ধান অভিযান স্থগিত করে। দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে তারা।
একজন উদ্ধারকারী বলেন, খাদ্য সরবরাহ কমে যাওয়ায় নিরাপত্তা পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে।
সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ গ্রুপ আইএসএআর এবং জার্মানির ফেডারেল এজেন্সি ফর টেকনিক্যাল রিলিফ (টিএসডব্লিউ) এর জার্মান শাখা নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ উল্লেখ করে অপারেশন স্থগিত করেছে। অস্ট্রিয়ান সেনাবাহিনীর একটি টিমও একই অভিযোগ তুলে স্থগিত করেছে উদ্ধার কাজ।
তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ৬ দিনের মাথায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৯ হাজারেরও বেশি। এখনও ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে আছে বহু মানুষ।
তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতে জানিয়েছেন, শুধু তুরস্কেই নিহত হয়েছে ২৪ হাজার ৬০০ জন। দেশটির ১০টি প্রদেশের ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই ভয়াবহ দুর্যোগে। তিনি আরও জানান, ৩২ হাজার ৭১টি টিম উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।
এদিকে, সিরিয়ান অবজারভেটরি হিউম্যান রাইটস বলছে, সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১৮৯ জনে। এখনও নিখোঁজ হাজার হাজার মানুষ। ভূমিকম্পের ফলে চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে দেশ দুটিতে। ত্রাণের জন্য হাহাকার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
সোমবার ভোরের দিকে যখন মানুষজন ঘুমিয়ে ছিলেন ঠিক তখনই আঘাত হানে এই ভূমিকম্পে। মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা( ইউএসজিএস) জানায়, সোমবার স্থানীয় সময় ৪টা ১৭ মিনিটে প্রথম কম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। কম্পনের উৎসস্থল ছিল তুরস্কের গাজিয়ানতেপ প্রদেশের পূর্ব দিকে নুরদাগি শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার পূর্বে ভূগর্ভের প্রায় ২৪ দশমিক ১ কিলোমিটার গভীরে।