ইরানের নৈতিকতাবিষয়ক পুলিশের হেফাজতে মাহসা আমিনি (২২) নামে এক কুর্দি তরুণীর মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে যে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে পশ্চিমারা ইন্ধন দিয়ে আসছেন বলে বরাবরই অভিযোগ করে আসছে ইরান।
এরই মধ্যে তেহরান থেকে বিক্ষোভের উসকানি দেওয়ার অভিযোগে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ৯ নাগরিককে গ্রেফতার করেছে ইরানের পুলিশ। খবর আনাদোলুর।
তাদের বিরুদ্ধে ইরানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে। দিন দিন বিক্ষোভের মাত্রা বাড়তে থাকায় ইরান কঠোর হাতে এ আন্দোলন দমন করছে।
ইরানের গোয়েন্দাবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আটক ৯ জন হচ্ছে— পোল্যান্ড, ইতালি, ফ্রান্স, সুইডেন, জার্মানি ও নেদাল্যান্ডসের নাগরিক।
আগে থেকেই জার্মানি, ব্রিটিশ ও সুইডেনের দূতাবাসকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেছিল ইরান।
এদিকে ইরানের সিস্তানের আঞ্চলিক গভর্নর হোসেন খিয়াবানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, শুক্রবার এক সংঘর্ষের ঘটনায় ইসলামিক বিপ্লবী গার্ডের প্রাদেশিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা কর্নেল আলী মুসাভিসহ ১৯ জন নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।’
নিহত ও আহত অন্যদের ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাননি হোসেন খিয়াবানি।
সিস্তান-বেলুচিস্তান সীমান্ত অঞ্চলটি দারিদ্র্যপীড়িত। এখানে আফগানিস্তানেরও সীমান্ত রয়েছে। এ অঞ্চলে মাদক চোরাচালানকারীদের সঙ্গে সংখ্যালঘু বেলুচ ও সুন্নি চরমপন্থি গোষ্ঠীর সঙ্গে প্রায়ই সংঘর্ষ হয়।
শুক্রবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বন্দুকধারীরা প্রাদেশিক রাজধানী জাহেদানের একটি থানায় হামলা চালালে নিরাপত্তা বাহিনী পাল্টা হামলা চালায়। এতে কয়েকজন পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন পথচারীও আহত হয়েছেন।
এদিকে ২২ বছর বয়সি কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যু ঘিরে ইরানে এখনো ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে। প্রায় দুই সপ্তাহের এ বিক্ষোভে এ পর্যন্ত ৮৩ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর)।
সঠিকভাবে হিজাব না পরার অভিযোগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরান থেকে মাহসা আমিনিকে গ্রেফতার করেছিল ইরানের নৈতিকতাবিষয়ক পুলিশ। পরে পুলিশি হেফাজতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়।
ইউআর/