‘মাতৃভূমিকে রক্ষার জন্য’ সেনা সমাবেশের নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বুধবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট পুতিন রাশিয়ার তিন লাখ জনবল সম্পন্ন সামরিক রিজার্ভের আংশিক সমাবেশের ঘোষণা দেন। পুতিনের এই ঘোষণার পরই রাশিয়ায় ওয়ান ওয়ে টিকিট বিক্রি বেড়ে গেছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বুধবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে টেলিভিশন ভাষণের পর অনেকের মনে শঙ্কা জাগে যে নির্দিষ্ট বয়সের পুরুষদের রাশিয়া ছাড়তে দেওয়া হবে না।
যদিও রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু বলেছেন পুতিনের এই ঘোষণা পেশাদার সৈনিক হিসেবে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। শিক্ষার্থী এবং যারা শুধু নিয়োগপ্রাপ্ত হিসেবে কাজ করেছেন তাদের ডাকা হবে না।
তারপরও বিমান টিকিট কেনার জন্য রাশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় সাইট এভিয়াসেলের গুগল ট্রেন্ড ডাটাতে দেখা গেছে, মস্কো থেকে তুরস্কের ইস্তাম্বুল এবং আর্মেনিয়ার ইয়েরেভান পর্যন্ত সরাসরি ফ্লাইটের সব টিকিট বুধবার বিক্রি হয়ে গেছে। এই দুই দেশই রাশিয়ানদের ভিসা ছাড়াই প্রবেশ করতে দেয়।
মস্কো থেকে জর্জিয়ার রাজধানী তিবিলিসিসহ অন্য অনেক রুটের টিকিটও বিক্রি হয়ে গেছে। এছাড়া মস্কো থেকে দুবাইয়ের ফ্লাইটের ভাড়াও প্রায় পাঁচগুণ বেড়েছে।
প্রসঙ্গত, স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পুতিন পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি হুমকি দিয়ে বলেন, আমাদের দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতা যদি হুমকির মধ্যে পড়ে, রাশিয়া এবং এর জনগণকে রক্ষা করার জন্য আমরা সবরকমের পদক্ষেপ নেব। এটা কোনো ধাপ্পাবাজি নয় বলেও সতর্ক করেন তিনি।
এ সময় পুতিন রাশিয়ার ২০ লাখ জনবল সম্পন্ন সামরিক রিজার্ভের আংশিক সমাবেশের ঘোষণা দেন। রাশিয়া এবং নিজের অঞ্চলগুলোকে রক্ষা করার জন্য এই ঘোষণা দেন তিনি।
এ নির্দেশনার ফলে যারা কোনো একসময় রুশ সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন বা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ভবিষ্যতে যে কোনো প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর জন্য সেই সব সংরক্ষিত সৈন্যদের এখন যুদ্ধ করার জন্য ডেকে পাঠানো হবে।
ভ্লাদিমির পুতিন ভাষণে বলেছেন, রাশিয়ার মাতৃভূমি, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা আর জনগণের নিরাপত্তা রক্ষা করার তিনি সৈন্য সমাবেশের নির্দেশ দিয়েছেন। বুধবার থেকেই সেনা সমাবেশ শুরু হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, যারা পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে আমাদের ব্ল্যাকমেইল করতে চায়, তাদের জানা উচিত যে, পাল্টা বাতাস তাদের দিকেও যেতে পারে।
তিনি অভিযোগ করেন, পশ্চিমা দেশগুলো প্রমাণ করেছে যে, তারা চায় না রাশিয়া আর ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি বজায় থাকুক।
এমন সময়ে পুতিন এ ভাষণটি দিলেন, যখন মস্কো পূর্ব এবং দক্ষিণে ইউক্রেনের ভূখণ্ডের ওপর তার দখলকে সুসংহত করতে শুরু করেছে। তারা আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ায় যোগদানের জন্য ইউক্রেনের মুক্ত এলাকাগুলোতে গণভোট আয়োজনের পরিকল্পনা করছে।
ইউআর/