রিয়ালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে চেলসি

তেতে ওঠার উপলক্ষ কম ছিল না। প্রথম লেগে ১-১ গোলের ড্র-ই বলছিল, গোল করতে হবে। সেই ঘায়ে নুনের ছিটা দেয় চেলসি সমর্থকেরা, স্টাম্পফোর্ড ব্রিজে ঢোকার পথে রিয়াল মাদ্রিদ টিমবাসে বোতল ছুঁড়ে মেরে। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদ মাঠে এ সমাদরের যে প্রতিদান দিয়েছে, তাতে চেলসি সমর্থকদের খুশিতে ডগমগ করার কথা। ইস্তাম্বুলে অল ‘ইংলিশ ফাইনাল’-ই হচ্ছে।

গোলটাই করতে পারেনি রিয়াল। চেলসির ঘরের মাঠে ফিরতি লেগে ২-০ গোলের হারে শেষ হলো রিয়াল মাদ্রিদের চ্যাম্পিয়নস লিগ অভিযাত্রা। দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ গোলের জয়ে ৯ বছর পর ইউরোপসেরার মঞ্চে ফাইনালের দেখা পেল চেলসি। ২৯ মে ইস্তাম্বুলে শিরোপার লড়াইয়ে আরেক ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটির মুখোমুখি হবে টমাস টুখেলের দল।

পুরো ম্যাচের সুর বাঁধা ছিল প্রথম কুড়ি মিনিটেই। প্রথম কয়েক মিনিটে ধারাল ফুটবল খেলেছে রিয়াল। করিম বেনজেমা, এডেন হ্যাজার্ডরা চেলসির বক্সে বল নিয়ে ঢোকার চেষ্টা করেছেন। চেলসি রক্ষণের কাজটা সেরে মাঝমাঠে খেলাটা গুছিয়ে গোল আদায় করে নেওয়ার মতো আক্রমণ করেছে। রিয়ালের ডান প্রান্ত দিয়ে ম্যাসন মাউন্ট, কাইল হার্ভার্টজরা কাঁপুনি দিয়েছেন রিয়ালের রক্ষণে। ২৮ মিনিটে টিমো ভেরনারের গোলটা তার ফল।

গোলের মূল কারিগর এনগোলো কান্তে। রিয়াল বক্সের সামনে ভেরনারের সঙ্গে বল আদান-প্রদান করে হাভার্টজকে পাস দেন কান্তে। চেলসির জার্মান মিডফিল্ডারের চিপ ক্রস বারে লেগে নামার সময় শুধু মাথা ঠুকে গোলের আনুষ্ঠানিকতা সেরেছেন ভেরনার। তবে ১৮ মিনিটেই গোলের খাতায় নাম লেখাতে পারতেন জার্মান ফরোয়ার্ড। অফসাইডের কারণে তাঁর গোলটি বাতিল হয়। প্রথমার্ধে চেলসি তারকা ম্যাসন মাউন্টও গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। এ সময় দারুণ গতিতে রিয়ালের ডান প্রান্তে ত্রাস ছড়ান তিনি।

প্রথমার্ধে ৭২ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে বলার মতো দুটি আক্রমণ করতে পেরেছে রিয়াল। সেটিও বেনজেমার একক প্রচেষ্টায়। দুটি চেষ্টাই দারুণ দক্ষতায় রুখে দেন চেলসি গোলরক্ষক এদুয়ার্দ মেন্দি।

প্রথমার্ধে চেলসি খেলার ছন্দ পেয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে স্রেফ দাপট ছড়িয়েছে। ওদিকে প্রথমার্ধে ম্যাড়ম্যাড়ে খেলার পর রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান একাদশে কেন পরিবর্তন আনলেন না, সে প্রশ্ন উঠবে।

রিয়াল বিরতির পরও আড়মোড়া ভাঙতে পারেনি। এডেন হ্যাজার্ডের কাঁধে দায়িত্ব ছিল, তেতে ওঠার উপলক্ষ্য ছিল। গত জানুয়ারির পর দ্বিতীয়বারের মতো ফিরেছেন রিয়াল একাদশে, দলের বিপদের সময়, তাও নিজের সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে। দর্শকহীন গ্যালারিতে দুয়োও শোনারও সুযোগ ছিল না।

কিন্তু প্রথমার্ধের শুরুতে হ্যাজার্ডকে বক্সের সামনে কয়েকবার ঘুরতে দেখা গেছে। এরপর নিজের ছায়া! বেলজিয়ান তারকা ম্যাচ খেলার মতো ফিট ছিলেন কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

দ্বিতীয়ার্ধে রিয়াল গোল হজম করেনি কোর্তোয়ার দৃঢ়তায়। কান্তে ও হার্ভার্টজকে হতাশ করেন বেলজিয়ান গোলরক্ষক। ম্যাসন মাউন্টের শট পোস্টের ওপর দিয়ে যায়।

সেই মাউন্টই নির্ধারিত সময়ের ৫ মিনিট আগে গোল করে চেলসির ফাইনালের খামে সীলমোহর মেরে দেন। গোটা ম্যাচে দাপিয়ে খেলা কান্তের পাস থেকে পুলিসিচ ক্রস বাড়ান মাউন্টকে। গোল করতে ভুল হয়নি ইংলিশ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের।

অধিনায়ক সের্হিও রামোস দলে ফিরলেও বিরতির পর ভুগেছে রিয়ালের রক্ষণভাগ। নাচো ও এদের মিলিতাও মাউন্ট-কান্তেদের গতি ও কুশলী পাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রক্ষণ সামলাতে পারেননি।

ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় চেলসির বিপক্ষে এ নিয়ে পাঁচবারের মুখোমুখিতে জয়বঞ্চিত রইল রিয়াল। অন্যদিকে প্রথম ক্লাব হিসেবে ছেলে ও মেয়েদের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে উঠল চেলসি।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img