তিউনিশিয়ার বহুল বিতর্কিত নতুন সংবিধানের ওপর সোমবার গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। এ ভোটে মোট ভোটারের প্রায় ২৫ ভাগ ভোট প্রদান করেন।
যে সকল ব্যক্তি ভোট দিয়েছেন তার মধ্যে ৯২.৩ ভাগ মানুষ নতুন সংবিধানের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। বাকিরা বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট কাইস সাঈদ নতুন সংবিধানটি পাশের জন্য গণভোটের আয়োজন করেন। তার এ বিতর্কিত সংবিধানে বেশিরভাগ মানুষই সম্মতি দিয়েছে।
এ সংবিধানে তিউনিশিয়ার রাষ্ট্রধর্মে ইসলামের নাম উল্লেখ নেই।
আগের সংবিধানে লেখা ছিল, তিউনিশয়া স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র। যার রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম।
নতুন সংবিধানে লেখা আছে, তিউনিশিয়া একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র।
তবে সংবিধানে ইসলামের কথা উল্লেখ আছে। সেটি নিচের দিকে। বলা হয়েছে, তিউনিশিয়া ইসলামিক উম্মাহর দেশ। এটি মানুষের নৈতিকতা, অর্থ, ধর্ম এবং স্বাধীনতা রক্ষা করে ইসলামের লক্ষ্য অর্জন করবে।
তিউনিশিয়ার প্রেসিডেন্ট কাইস সাঈদ গত বছরের জুলাই মাসে দেশটির পার্লামেন্ট ভেঙে দেন। এরপর একটি ডিক্রি জারি করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেন। এখন পর্যন্ত এ ডিক্রি দিয়েই প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তিনি।
ডিক্রির মাধ্যমে ক্ষমতা নেওয়া সাঈদের এ কাজটিকে ওই সময় ‘অভ্যুত্থান’ হিসেবে অভিহিত করেন দেশটির রাজনীতিবীদরা।
নতুন সংবিধানে প্রেসিডেন্টকে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী করা হয়েছে। সংসদদে পুরোপুরি দুর্বল করে দেওয়া হয়েছে।
নতুন সংবিধানে রয়েছে প্রেসিডেন্ট দেশের সব দায়িত্ব পালন করবেন।
বিচার ব্যবস্থা এবং সরকারের সব ক্ষমতা থাকবে প্রেসিডেন্টের কাছে। সরকার প্রেসিডেন্টের কাছে কৈফিয়ত দেবে, সংসদের কাছে না।
প্রেসিডেন্ট নতুন আইনের খসড়া দেবেন, রাষ্ট্রের বাজেট এবং চুক্তির বিষয়ে একমাত্র প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব পালন করবেন। প্রেসিডেন্ট মন্ত্রী ও বিচারককে নিয়োগ ও বহিস্কার করতে পারবেন। প্রতিরক্ষার সব দায়িত্ব প্রেসিডেন্টের হাতে থাকবে।
প্রেসিডেন্ট পাঁচ বছর করে দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন। কিন্তু যদি তিনি মনে করেন রাষ্ট্রের ওপর কোনো আঘাত আসতে পারে তাহলে সময় বাড়ানো যাবে। প্রেসিডেন্টের হাতে সংসদ ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে। কিন্তু প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করার কোনো বিধান নেই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন নতুন সংবিধানের মাধ্যমে তিউনিশিয়ায় ফের এক নায়কতন্ত্র কায়েম করেছেন প্রেসিডেন্ট কাইস সাঈদ।
ইউআর/