দেশের আর্থিক দুরবস্থা চরমে। এমন পরিস্থিতিতে স্কুল-কলেজ ও অফিস বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিল শ্রীলঙ্কা সরকার। জ্বালানির অভাবে ধুঁকছে দ্বীপরাষ্ট্র। তাই বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। যানবাহন চালানোর মতো প্রয়োজনীয় তেলও পাওয়া যাচ্ছে না। সবদিক ভেবেই আপাতত সরকারি অফিস ও শিক্ষাকেন্দ্র বন্ধ রাখা হবে। সোমবার থেকেই এই নির্দেশ কার্যকর হবে। তবে অনলাইন ক্লাস করাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শিক্ষকদের।
শ্রীলঙ্কায় বিদেশি মুদ্রাও কমে এসেছে। সেই কারণে বিদেশ থেকে জ্বালানি আমদানি করতে পারছে না তারা। নিজেদের সঞ্চিত জ্বালানির পরিমাণও কমে গিয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দিনে প্রায় ১৩ ঘণ্টা ধরে লোডশেডিং হচ্ছে। এমন অবস্থায় দেশের শিক্ষা দপ্তর থেকে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, দিনের অধিকাংশ সময়েই বিদ্যুৎ থাকছে না। সেই কারণেই আপাতত স্কুল বন্ধ থাকবে। বাড়িতে বসে অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে পড়াশোনা চলবে। তবে বিদ্যুৎ না থাকলে অনলাইন ক্লাস কী করে সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে।
দেশের বিভিন্ন পেট্রল পাম্পে লম্বা লাইন দিয়েও তেল পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। তাই যাতায়াতের ক্ষেত্রে ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র দপ্তর থেকে নির্দেশিকা দিয়ে বলা হয়েছে, “দেশে পর্যাপ্ত জ্বালানি নেই। তাই যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। নিজেদের গাড়ি থাকলেও তা নিয়ে রাস্তায় বেরনো যাচ্ছে না। সেই কারণেই খুব কম সংখ্যক কর্মচারীকে নিয়ে অফিস চালানোর নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।” তবে ছুটি নেই চিকিৎসাকেন্দ্রগুলির কর্মচারীদের। অফিসে এসেই তাদের কাজ করতে হবে।
ইতিমধ্যেই প্রতি শুক্রবার ছুটি ঘোষণা করেছে দ্বীপরাষ্ট্রের সরকার। সরকারি কর্মচারীদের কৃষিক্ষেত্রে গিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে, কারণ অদূর ভবিষ্যতে খাদ্যাভাব প্রকট হয়ে উঠবে শ্রীলঙ্কায়। সেই কারণে প্রতি সপ্তাহে একদিন করে ছুটি দেওয়া হয়েছে তাদের। আগামী তিনমাস এই নিয়ম কার্যকর থাকবে। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহে বলেছেন, দেশে খাদ্যের পরিমাণ কমে গেলে প্রায় চল্লিশ লক্ষ মানুষ দুর্ভিক্ষের শিকার হবেন।
ইউআর/