পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম নিয়ে বিভ্রান্তি কাটছেই না। ১৭ রাউন্ড ভোটগণনার পর তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে জয়ী হয়েছেন বলে খবর আসছিল।
কিন্তু সন্ধ্যা গড়াতে দেখা যায় ১৬২২ ভোটে সেখানে জয়ী হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি নিজেই সে কথা জানিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার ফোনে তিনি বলেন, ১৬২২ ভোটে জিতেছি আমি।
এ ব্যাপারে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দিদি। তার কথায়, আমরা ২০০-র বেশি আসনে জিতেছি। একটা আসনে হারা জেতা বড় ব্যাপার নয়। ওরা একবার ঘোষণা করে দিয়েছিল যে আমি জিতে গেছি। এখন বলছে হেরে গেছি। এটা কী করে হয় জানি না। তবে ওখানকার মানুষ যে রায় দিয়েছেন তা মেনে নিচ্ছি। ওখানে ভোট গণনা যাতে রিভিউ করা হয় সেই দাবি জানাব। দরকার হলে আদালতেও যাব।
এর আগে যদিও সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছিল, ১২০০’র বেশি ভোটে সেখানে জয়ী হয়েছেন মমতা। সার্ভারের ত্রুটির জেরে এমনিতেই চল্লিশ মিনিট ভোটগণনা বন্ধ ছিল সেখানে।
এর পর মমতার জয়ের খবর সামনে আসার পরও কোনো তথ্য প্রকাশ করতে পারেনি না কমিশন। তার পরেই দেখা যায়, শুভেন্দু জয়ী হয়েছেন। তবে কমিশনের তরফে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি।
নিজ দলের প্রার্থীদের জয়ের খবর পেলেও নিজ আসন নন্দীগ্রামে সকাল থেকেই পিছিয়ে ছিলেন মমতা। রোববার সকালে ভোট গণনার পর থেকেই নিজ আসনে মমতার হেরে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়। তাও আবার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক শীষ্য শুভেন্দু অধিকারীর কাছে।
এই দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলে। এক রাউন্ডে শুভেন্দু এগিয়ে গেলে পরে রাউন্ডে আবার মমতা এগিয়ে যান। এভাবে চলে ভোট গণনা। মোট ১৭ রাউন্ডে ভোটগণনা শেষে ১২০০’র বেশি ভোট পেয়ে মমতা জয়ী হয়েছেন বলে খবর দেয় ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই।
এদিন নন্দীগ্রামে ভোট গণনায় সকাল থেকে একের পর এক রাউণ্ডে শুভেন্দুর জয়ের ব্যবধান বাড়ছিল। এক সময়ে তা ১০ হাজার পেরিয়ে যায়। কিন্তু পরের রাউন্ডগুলিতে ব্যবধান কমতে থাকে। এক সময় মমতা ব্যানার্জী এগিয়ে যান।
ফের তাকে পিছনে ফেলে ৬ ভোটে এগিয়ে যান শুভেন্দু। তার পর বিকেল পাঁচটা নাগাদ হঠাৎই সংবাদসংস্থার একটি খবর রটে যায়। বলা হয়, দিদি ১২০০ ভোটে জিতে গিয়েছেন।
কিন্তু সেই খবর যখন রটে যায়, তখনও দেখা যায় দুর্গ আগলে বসে রয়েছেন শুভেন্দু। তার কিছু পরই জানা যায় যে ১৬২২ ভোটে এগিয়ে গিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রামে জিতেছেন তিনিই।
প্রসঙ্গত, গত বছর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি বিজেপি-তে যোগ দেন শুভেন্দু। তার পর লাগাতার মমতা ও তার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে যান তিনি। সূত্র : আনন্দবাজার