টিকাকে ‘বৈশ্বিক পাবলিক পণ্য’ হিসেবে বিবেচনার আহ্বান

কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনকে ‘বৈশ্বিক পাবলিক পণ্য’ হিসেবে বিবেচনা করতে আবারও আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (২২ মে) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত ৭৫তম ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলির একটি হাই লেভেল সেগমেন্টে আগের রেকর্ডকৃত ভিডিও বার্তায় তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিশ্বাস করি ভ্যাকসিনকে বৈশ্বিক পাবলিক পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। লাখ লাখ মানুষকে টিকার বাইরে রেখে আমরা টেকসই মুক্তি নিশ্চিত করতে পারবো না।

প্রযুক্তিগত ও কারিগরি সহায়তা পেলে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো বড় পরিসরে টিকা উৎপাদন করতে পারবে বলে জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ভবিষ্যৎ মহামারিগুলো অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষমভাবে মোকাবিলা করতে আমাদের অবশ্যই ‘মহামারি চুক্তি’ (Pandemic Treaty) শেষ করতে হবে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট রোগের বিষয়ে বাড়তি মনোযোগ দেওয়ারও আহ্বান জানান সরকার প্রধান।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, অবহেলিত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগসহ চিকিৎসা গবেষণায় সহযোগিতা করতে বাংলাদেশ প্রস্তুত।

এ সময় অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সকে সমন্বিতভাবে মোকাবিলার আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অবশ্যই উন্নয়নশীল দেশগুলোয় বিস্তৃত অসংক্রামক রোগের বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া উচিত। ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস চিকিৎসা ও গবেষণায় আমাদের আরও বিনিয়োগ করতে হবে।

মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যাগুলোও জরুরি স্বাস্থ্য সমস্যার অংশ হিসেবে সমাধান করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনা, ডুবে যাওয়া এবং অন্যান্য জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সমর্থন চান তিনি।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, সব বয়সের মানুষের সুস্থ জীবনযাপনের জন্য এসডিজি-৩ অর্জনে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার মানুষের দৌরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে।

কোভিড-১৯ এখনো সারা বিশ্বে মানুষের জীবন ও জীবিকায় ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। সমন্বিত স্বাস্থ্য সেবা, অর্থ সহায়তা ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশ পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। করোনা সংকট কাটাতে ২৮টি প্যাকেটে ২৩ বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

সরকার ৪০ মিলিয়নের মতো ক্ষতিগ্রস্থ মানুষকে নগদ অর্থসহ অন্যান্য সহায়তা দিয়েছে। বিনামূল্যে টিকা প্রদান ও ভ্যাকসিন কিনতে বাংলাদেশ সরকারের ১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখার কথাও ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলিতে তিনি উল্লেখ করেন।

কোভ্যাক্স’র আওতায় অনুদান হিসেবে ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য উন্নয়ন অংশীদারদের ধন্যবাদ দেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোরান মিলানোভিক, কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা, ডোমিনিক্যান রিপাবলিকের প্রেসিডেন্ট লুইস অ্যাবিনাদার ও ইকুয়েডরের ভাইস প্রেসিডেন্ট আলফ্রেডো বোরেরো।

ইউআর/

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img