পাহাড়ি আস্তানা থেকে সাদ্দাম বাহিনীর প্রধান সাদ্দাম হোসেন (২৫) কে দেশিয় তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, কিরিচ ও রামদাসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় তাই দুই সহযোগিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার (১ মে) ভোরে শহরের রুমালিয়ারছড়াস্থ সিকদার পাড়ার মাটিয়াতলি এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ, সদর থানা, শহর পুলিশ ফাঁড়ি ও জেলা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেন।
বাহিনীর প্রধান সাদ্দামের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র ও ডাকাতিসহ ১০ টি নিয়মিত মামলা রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার ডিবি ওসি শেখ মো. আলী। সাদ্দাম শহরের রুমালিয়ারছড়া সমিতি বাজার এলাকার মৃত সালেহ আমদের ছেলে।
পুলিশ জানিয়েছেন, কক্সবাজার শহরের কয়েকটি শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে সাদ্দাম বাহিনী অন্যতম। প্রায় ৪ বছর ধরে শহরের পাহাড়ি ও দুর্গম এলাকা- রুমালিয়ারছড়াস্থ সমিতি বাজার, সিকদার বাজার, কক্সবাজার জেল কারাগারের পিছনের এলাকা, পল্লানিয়া কাটা, আমতলী পাহাড়ী এলাকা, সাতিহিত্যা পল্লীর ভিতরে, বিজিবি ক্যাম্পের পশ্চিমে ও আলীর জাহান গরুর হালদা এলাকায় রাজত্ব করে চলছে।
ওই পাহাড়ি এলাকায় গড়ে তুলেছে নিজেদের আস্তানা। রাতের বেলায় তাদের এসব এলাকায় অবাধ বিচরণ। পুলিশের ভয়ে তারা সহজেই প্রধান সড়কমূখী হয় না। ওই পাহাড়ি এলাকার বিশেষ করে জেল কারাগারের পিছনের বেশ কয়েকজন ব্যক্তি তাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে রয়েছে।
ওই এলাকার বেশ কয়েকজন সমাজনেতা বলেন, সাদ্দাম বাহিনীর কাছে সবাই অসহায়। এখানের বেশ কয়েকটি এলাকায় তারা রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। তাদের হাতে জিম্মি প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। মানুষদের নিয়মিত চাঁদা দিতে হয় তাদের। কারো বাড়িতে মেহমান আসলে ছিনতাইয়ের শিকার হয়।
ঘর নির্মাণ করতে বা জায়গা ক্রয় বিক্রয় করলে তাদের দিতে হয় নিয়মিত চাঁদা। তাদের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কথা বলায় নিহত হয়েছে অনেকজন। আহত হয়ে অনেকেই এখন পঙ্গু।
কক্সবাজার শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, দীর্ঘ চেষ্টার পর শনিবার ভোরে সাদ্দাম বাহিনীর প্রধান সাদ্দাম হোসেনকে অস্ত্র, গুলি, কিরিচ ও রামদা’সহ গ্রেপ্তার করতে পেরেছি। তার বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলাসহ প্রায় ১০টি নিয়মিত রয়েছে।
সাদ্দাম বাহিনীতে রয়েছে ৫ থেকে ৬ জন সক্রিয় সদস্য। এরমধ্যে সাদ্দামের সাথে দুইসহযোগি গ্রেপ্তার হয়েছে। তারা পাহাড়ি এলাকা গুলোতে নিয়মিত অপরাধ কর্মকান্ড চালায়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, একটি ডাকাত গ্রুপ অস্ত্র নিয়ে রুমালিয়ারছড়া সমিতি বাজার এলাকায় অবস্থান করছে; এমন গোপন সংবাদ পেয়ে শনিবার (১ মে) ভোররাতে সেই দুর্গম এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে। পুলিশের অভিযানে ভোর ৬ টার দিকে একটি বাসা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এসময় তাদের কাছ থেকে অস্ত্র, গুলি, রামদা, কিরিচ ও মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। পরে জানা গেলো তিনজনের মধ্যে একজন সাদ্দাম বাহিনীর প্রধান সাদ্দাম হোসেন। যার বিরুদ্ধে প্রায় ১০টি নিয়মিত মামলা রয়েছে এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী।