দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চায় দেশের যেকোনও রাজনৈতিক দলের চেয়ে আওয়ামী লীগ এগিয়ে রয়েছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘নির্বাচনবিমুখ একটি দল কীভাবে গণতন্ত্রের কথা বলে? গণতান্ত্রিক চর্চায় সর্বদাই বিএনপির এক ধরনের অনীহা রয়েছে।’
রবিবার (২০ মার্চ) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের ‘লাগাতার মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের’ তীব্র ‘নিন্দা ও প্রতিবাদ’ জানিয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি করেন।
বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েও জাতীয় সংসদে যাওয়া নিয়ে বিএনপি দ্বিধাগ্রস্ত ছিল। একদিকে তাদের মহাসচিব নির্বাচিত হয়েও সংসদে অংশ নেননি, অন্যদিকে সংসদে তাদের দলের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। এ ধরনের দ্বিধাগ্রস্ত এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে অক্ষম রাজনৈতিক নেতৃত্ব দেশের কল্যাণ করার সক্ষমতা রাখে না; এটা প্রমাণিত।
শেখ হাসিনার সুদক্ষ রাষ্ট্র পরিচালনায় এ দেশের মানুষের ভাগ্যের যত উন্নয়ন ঘটছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাংলাদেশ যত উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অগ্রসর হচ্ছে, বিএনপি নেতারা ততই হতশাগ্রস্ত হয়ে প্রতিনিয়ত প্রলাপ বকছে। আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশে উন্নয়নের নতুন নতুন মাত্রা আমাদের আর্থ-সামাজিক জীবনের যে পরিবর্তন সাধন করেছে এবং তার ভিত্তিতে নতুন প্রজন্মের যে মানসিকতা ও স্বপ্ন-আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে তা ধারণ করার মতো রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও সক্ষমতা বিএনপির নেই।’
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছে— আওয়ামী লীগ এবং গণতন্ত্র নাকি একসঙ্গে যায় না। মির্জা ফখরুলকে বলতে চাই— আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন। আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দীর্ঘ স্বৈরশাসনের অবসান ঘটেছে এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ দেশের মানুষের স্বাধিকার, স্বাধীনতা, মুক্তি, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগের লাখ লাখ নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছে। এ দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র একমাত্র আওয়ামী লীগের হাতেই নিরাপদ।
গণতন্ত্রের বিকাশ ও অগ্রযাত্রায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কারফিউ মার্কা গণতন্ত্র আর গণতন্ত্রের আড়ালে মুখোশধারী স্বৈরাচারদের হাত থেকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে পুনরুদ্ধার করেছেন শেখ হাসিনা।’
বর্তমান সরকার নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমে নয় বরং তার স্বাধীনতায় বিশ্বাসী বলে জানান ওবায়দুল কাদের। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এ দেশের গণমাধ্যমের বিকাশ ও সমৃদ্ধিতে ইতিবাচক সকল প্রয়াস আওয়ামী লীগই গ্রহণ করেছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আছে বলেই জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি’র রাজনীতি শুধুমাত্র মিডিয়াতে লিপ সার্ভিস দেওয়ার মাধ্যমে টিকে আছে।’
‘বলা চলে, গণমাধ্যমই বিএনপি’র অস্তিত্বকে টিকিয়ে রেখেছে’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রতিনিয়ত বিএনপি নেতারা সরকারের বিরুদ্ধে নিলর্জ্জ মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। প্রতিদিন তাদের ডজন খানেক নেতা টেলিভিশনে মনগড়া ও বানোয়াট তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে অবাধ বাক-স্বাধীনতা ভোগ করছে। তারপরও তাদের নাকী বাক-স্বাধীনতা নেই! গণমাধ্যমের নাকী স্বাধীনতা নেই! এ থেকেই প্রতিয়মান হয় যে, বিএনপি’র কাছে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা মানে হলো- ভিত্তিহীন ও দূরভিসন্ধিমূলক তথ্য প্রচারের মাধ্যমে তাদের ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের সহায়ক ভূমিকা পালন।’
ইউআর/