সড়কে শৃঙ্খলা না ফিরলে সব উন্নয়ন ব্যর্থ হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সড়কে শৃঙ্খলা আনাই চ্যালেঞ্জ এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, পরিবহন ও সড়কে শৃঙ্খলার বড় সঙ্কট রয়েছে। দেশে এত রাস্তা, ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস, সীমান্ত সড়ক, মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ হচ্ছে। তারপরও আমরা কেন সড়কে শৃঙ্খলা আনতে পারবো না।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় অবস্থিত সড়ক ভবন মিলনায়তনে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০২১ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ‘গতিসীমা মেনে চলি, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় আয়োজন করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।
সেতুমন্ত্রী বলেন, কখনও দুই পরিবহনের সংঘর্ষে, কখনও তিন চাকার গাড়ি ইজিবাইক, নসিমন-করিমন দুর্ঘটনায় লোকজন প্রাণ হারায়। এর জন্য আমরা ২২ সড়কে এগুলো নিষিদ্ধ করেছি। কিন্তু অনেক জায়গায় এই নিষেধাজ্ঞা মানা হচ্ছে না। আর ইদানিং নতুন উপদ্রব হচ্ছে মোটরসাইকেল। মোটরসাইকেল কোনো নিয়ম মানে না। প্রতিদিন সড়কে যে দুর্ঘটনা হয়, বেশির ভাগই মোটরসাইকেল। দুইজন তিনজন চড়ে হেলমেট নাই। সেটা আমার চেষ্টা করে চালকদের হেলমেট পড়তে বাধ্য করেছি। এখন সবাই মোটরসাইকেল চালাতে নিয়ম মানে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মাঝে মাঝে দেখা যায়, অনেকে নিয়ম মানছে না। তারা রাজনৈতিক কর্মী ও তরুণ-তুর্কি। কিছু রাজনৈতিক কর্মী আছে, তারা একসঙ্গে ঝাঁকে ঝাঁকে মোটরসাইকেল চালায়। তিনজন করে বসে, মাথায় হেলমেট নেই। বোঝা যায় তারা দাপট দেখাচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ নিয়ম মানে। প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার সময় দেখি সব মোটরসাইকেল চালক হেলমেট পরে যাচ্ছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, পুলিশ দেখায় কত মামলা হয়েছে, কত জরিমানা করেছে। এগুলো আমার কাছে কোনো বিষয় না। আমার কাছে বিষয় হচ্ছে সড়ক নিরাপদ আছে কি না, সড়কে দুর্ঘটনা কমেছে কি না। গাড়ির ফিটনেস আছে কি না। চালকের ফিটনেস আছে কি না। গাড়ি ওভার স্পিডে আছে কি না, চালক গাড়ি চালানোর যোগ্য কি না- এগুলো আমার দেখার বিষয়।
প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে, পাখির মত মানুষ মরছে, মাছির মত মানুষ মরছে। এই মর্মান্তিক দৃশ্যগুলো মানুষ হিসেবে আমি সইতে পারি না। এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে অনেক কষ্ট করেছি, রাতে দিনে, বৃষ্টিতে-রোদে-শীতে রাস্তায় ঘুরেছি। কিন্তু কাঙ্খিত ফল পাইনি। কিন্তু সড়কের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তাই এবার সড়কে দুর্ঘটনা কমাতে হবে। রাস্তাকে নিরাপদ করতে হবে। পরিবহনে ও সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিআরটিএ‘র ড্রাইভিং লাইসেন্স দীর্ঘদিন ধরে আটকে রয়েছে। হাজার হাজার আবেদন, লাইসেন্স দেওয়া শুরু হয়েছে। আমি বলবো ছুটির দিনে কাজ করে হলেও আটকে থাকা লাইসেন্সগুলো দিয়ে দিত হবে। এখন লাইসেন্সের অনেক ডিমান্ড। এরজন্য আবেদনকারীরা হাহাকার করছে। এখন জট খুলেছে এটাই আশার বিষয়। আগামীতে আর কোনো জট যাতে না হয় সেটি আমার চাওয়া।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মল্লিক ফখরুল ইসলাম, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলেনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।