তালেবান সরকারকে যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় স্বীকৃতি না দেয়, তাহলে লাভবান হবে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস। তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেছেন তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি।
এ সময় তিনি আরও বলেন, তালেবান সরকারের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা আফগানিস্তানের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে আফগানিস্তানের রিজার্ভ আটকে দিয়েছে, সেটিকে আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলেও দাবি করেন মুত্তাকি। তিনি বলেন, এই অর্থ কেন আটকে দেওয়া হয়েছে? আফগানদের অপরাধ কী? তারা কী করেছে?
শুক্রবার কান্দাহারের শিয়া মসজিদে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে ইসলামিক স্টেট খোরাসান গ্রুপ। এরপরেই এমন মন্তব্য করলেন তালেবানের কোন উর্ধতন নেতা। ওই মসজিদে বিস্ফোরণে অন্তত ৪৭ জন নিহত এবং আরও ৭০ জন আহত হয়।
এদিকে আফগানিস্তানের পাঁচটি প্রদেশের মেয়েদের স্কুলগুলো খুলে দিয়েছে তালেবান সরকার। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা- ইউনিসেফের বরাতে ইরানের সংবাদ মাধ্যম পার্সটুডে জানায়, মেয়েদের স্কুল দেয়া এই পাঁচ প্রদেশ হচ্ছে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বালখ, জুযজান ও সামানগান, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কুন্দুজ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় উরুজগান।
সেপ্টেম্বর মাসে আফগানিস্তানে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করার ঘোষণা দেয় তালেবান। তবে এখন পর্যন্ত কোনো দেশ তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা জানান, তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি না দেওয়ার অন্যতম কারণ মেয়েদের লেখাপড়া করার অনুমতি না দেওয়া।
এদিকে ইরানের সংবাদ মাধ্যম পার্সটুডে জানায়, ইউনিসেফের উপ-প্রধান ওমর আবদি কাবুল সফর শেষ করে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে পৌঁছে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আফগানিস্তানের মোট ৩৪ প্রদেশের মধ্যে পাঁচটির গার্লস স্কুলগুলো খুলে দিয়েছে তালেবান।
তিনি আরও বলেন, তালেবান শিক্ষামন্ত্রী তাকে জানিয়েছেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের মেয়েরা যাতে স্কুলে যেতে পারে সে লক্ষ্যে তালেবান সরকার একটি ‘গঠনকাঠামো’ ঠিক করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
আগামী এক থেকে দু’মাসের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন হলে সকল আফগান ছাত্রী স্কুলে যেতে পারবে ।আবদি আরও বলেন, আমরা তাদের বলেছি কালক্ষেপণ না করতে।
কারণ লাখ লাখ আফগান মেয়ে শিক্ষার্থী শিক্ষার বাইরে চলে গেছে। প্রত্যেক সভায় আমরা তালেবানকে নারী শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকি।
এদিকে ইউনিসেফ উপ-প্রধানের বক্তব্য নিয়ে তালেবানের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।