প্রবাসীদের জন্য বিশেষ পেনশন স্কীম চালু করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
আজ রবিবার (১৭ অক্টোবর ২০২১ইং) সকালে বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি’র নেতৃবৃন্দ সুজনের সাথে স্বাক্ষাত করতে গেলে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট এ অনুরোধ জানান।
স্বাক্ষাতে বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি’র নেতৃবৃন্দ প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে সুজনের সাথে মতবিনিময় করেন। এসব সমস্যা নিরসনে সুজনের সহযোগিতা করেন। এর আগে নেতৃবৃন্দ বিদেশগামী কর্মীদের টিকা প্রদান, বিমানবন্দরে পিসিআর ল্যাব স্থাপন, প্রবাসীদের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান, বিশেষ ফ্লাইট চালু, বিমানের অতিরিক্ত ভাড়া কমানোসহ প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা নিরসনে তাদের পাশে থাকায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
এসময় সুজন বলেন, প্রবাসীদের মাঝে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চাকুরি এবং ব্যবসা বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখে চলেছেন। কিন্তু একটি নির্দিষ্ট সময় শেষে তাদেরকে চাকুরি এবং ব্যবসা বাণিজ্য শেষে স্বদেশে ফিরে আসতে হয়। তারা সেসব দেশগুলোতে স্থায়ীভাবে কিছু করার সুযোগ পায়না। অন্যদিকে ইউরোপের দেশগুলোতে যে সকল প্রবাসী থাকে তারা চাকুরি এবং ব্যবসা বাণিজ্যের পাশাপাশি সেদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পান। যা একজন মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীর জন্য অসম্ভব। ফলে দীর্ঘসময় প্রবাস জীবন অতিবাহিত করে দেশে আসলেও তারা কোন প্রকার কাজের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারেন না। জীবনের শেষ সময়টুকু অনেকের অনাদরে কাটে। পরিবার পরিজনের নিকট তারা বোঝা হয়ে যায়।
তাই বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীদের জন্য একটি বিশেষ পেনশন স্কীম চালু করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানান সুজন। পেনশন স্কীমটা চালু হলে কোন প্রবাসী আর পরিবারের নিকট বোঝা হয়ে থাকবে না বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।
এছাড়া সরকার নির্ধারিত বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয় প্রবাসীদের। কিন্তু দেখা যায় যে মুষ্টিমেয় কিছু প্রবাসী সরকার প্রদত্ত এসব সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আর বেশিরভাগ প্রবাসীই এসব সুযোগ সুবিধার বাইরে থাকে বছরের পর বছর। তাই সরকার নির্ধারিত সুযোগ সুবিধাসমূহ সকল প্রবাসী যাতে সমান হারে ভোগ করতে পারে সেজন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, বিদেশে অবস্থানরত দূতাবাসগুলো হচ্ছে প্রবাসীদের সুখ দুঃখের ঠিকানা। কিন্তু অধিকাংশ সময় দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রবাসীদের সাথে খারাপ আচরন করে থাকে। প্রবাসীদের আকামা নবায়ন, পাসপোর্ট নবায়নসহ বিভিন্ন জটিলতা দূরীকরণে দূতাবাসগুলো প্রবাসীদের নানারকম ভোগান্তিতে ফেলে। দূতাবাসের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের আরো মানবিক হয়ে প্রবাসীদের সমস্যাগুলো সমাধান করার অনুরোধ জানান তিনি।
তাছাড়া একজন প্রবাসী বিদেশ থেকে দেশে আসলে বিমানবন্দরে তাকে নানা ধরণের ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে তাদের সাথে চোরের মতো আচরণ করা হয়ে থাকে। এমনকি মাঝে মাঝে প্রবাসীদের শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে বিমানবন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাব্যক্তিরা। তাই ভিআইপি এবং সিআইপিদের মতো প্রবাসীদের জন্যও দেশের প্রতিটি বিমানবন্দরে আলাদা কাউন্টার রাখার অনুরোধ জানান সুজন।
যাতে করে একজন প্রবাসী দেশে আসলে সম্মানের সাথে বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে তার গন্তব্যে পৌঁছতে পারে। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রধানতম হাতিয়ার রেমিটেন্স যোদ্ধা খ্যাত প্রবাসীদের নানাবিধ সমস্যাগুলো হৃদয় দিয়ে উপলব্দি করে সমাধানের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন সুজন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি’র সভাপতি ইফতেখার হোসেন বাবুল, সহ-সভাপতি মো. জামশেদুল আলম, যুগ্ম-সম্পাদক সেলিম আনসারী, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মো. আলাউদ্দিন, ক্রীড়া সম্পাদক রিয়াদ বিন রাজু, মোরশেদ আলম, মো. বাবলু প্রমূখ।