রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের (রবি) এক শিক্ষিকা কর্তৃক ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনাটি হাইকোর্টের নজরে আনা হয়েছে। বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) আদালত এ বিষয়ে শুনানির দিন নির্ধারণ করেন।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
গত রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ের ফাইনাল পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় ওই বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন আগে থেকে কাঁচি হাতে পরীক্ষার হলের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। শিক্ষার্থীরা হলে প্রবেশের সময় যাদের মাথার চুল হাতের মুঠোয় ধরা যায় তাদের মাথার সামনের অংশের বেশ খানিকটা চুল তিনি কাঁচি দিয়ে কেটে দেন। এভাবে একে একে ১৪ জন শিক্ষার্থীর চুল তিনি কেটে দেন। এরপর পরীক্ষা হলে শিক্ষার্থীদের পরিবার তুলে গালিগালাজ করেন তিনি। এতে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এই ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।
ঘটনার প্রতিবাদ করলে শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান তুহিনকে তার চেম্বারে ডেকে নিয়ে গালিগালাজ করেন ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের হুমকি দেন। এতে ভয়ে তুহিন রাত ৭টার দিকে দ্বারিয়াপুরের শাহমখদুম ছাত্রাবাসের নিজ কক্ষে দরজা বন্ধ করে ঘুমের ওষুধ সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। রাত ৮টার দিকে তার সহপাঠীরা বিষয়টি টের পেয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যান। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে রাতেই রবি ক্যাম্পাসে ছুটে এসে বিক্ষোভ করেন। গভীর রাত পর্যন্ত তাদের এ বিক্ষোভ চলে। পরে মঙ্গলবার সকাল থেকে তারা আবারও বিক্ষোভ শুরু করলে রবি ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে।
ওই ঘটনার পর অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তবে ওই শিক্ষিকার স্থায়ী অপসারণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ জন্য আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
পরে এ সংক্রান্ত ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে তা আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী হুমায়ন কবির পল্লব।