রাজধানীর গুলশানে এক তরুণীকে আত্নহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে দায়ী করে মামলা দায়ের করেছেন ঐ তরুণীর বোন নুসরাত জাহান।
নিহত ঐ তরুণীর নাম মোসারাত জাহান (মুনিয়া)। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার মনোহরপুরের উজীর দীঘির পাড়ে৷ সে রাজধানীর একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান।
সোমবার (২৬ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টার দিকে মামলার বিষয়টি গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, রাতে মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে গুলশান থানায় মামলা করেন। মামলা নম্বর-২৭।
মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর এর নাম উল্লেখ করা আছে।
মামলার একটি কপি
মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান বলেন, আমি নিজে বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলা করেছি।
তবে মামলার বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলতে রাজি না হলেও তিনি বলেন, মামলাটি হয়েছে একজন বিশিষ্ট শিল্পপতির ছেলের বিরুদ্ধে।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান জানিয়েছেন, ওই তরুণী ফ্ল্যাটটিতে একাই থাকতেন। সোমবার সন্ধ্যায় গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা থেকে তার বোন এসে দরজা বন্ধ পান। তিনি মুনিয়াকে ফোন দিলেও রিসিভড করছিলেন না। এরপর পুলিশকে খবর দিলে রাতে বাইরে থেকে দরজার তালা খুলে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
ওসি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ওই তরুণী আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের আগে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে না।’
নিহতের স্বজনের বরাতে পুলিশ জানায়, মুনিয়া তার বড় বোনকে ফোন করে বলেছিলেন ঝামেলায় পড়েছেন। এ কথা শুনে তার বোন সোমবার কুমিল্লা থেকে ঢাকায় এসে সন্ধ্যার দিকে ওই ফ্ল্যাটে যান। দরজায় ধাক্কাধাক্কি করলেও বোন দরজা খুলছিলেন না। এরও কিছুক্ষণ আগে থেকে তিনি মুনিয়ার ফোন বন্ধ পাচ্ছিলেন।
নুসরাত জাহানের বরাত দিয়ে গুলশান জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) নাজমুল হাসান ফিরোজ বলেন, মুনিয়ার সঙ্গে একজনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে মুনিয়া সেখানে একাই থাকতেন।
পুলিশের গুলশান জোনের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, তারা ভবনটির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং মুনিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপসহ ডিজিটাল ডিভাইসগুলো জব্দ করেছেন। এগুলো যাচাই করে তারপর সব বলা যাবে।
এন-কে