লিওনেল মেসিকে দলে ভিড়িয়ে সাড়া ফেলেছিল প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)। দলে তারকা খেলোয়াড় কিলিয়ান এমবাপ্পে ও ব্রাজিলিয়ান নেইমার আগেই ছিলেন। এই তিন বিশ্বসেরা ফুটবলারকে নিয়ে উজ্জীবিত পিএসজি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম ম্যাচেই হোঁচট খেয়েছে। ক্লাব ব্রুজের বিপক্ষে যেন নিজেদের খুঁজে ফিরছিলেন মেসি-নেইমার-এমবাপেরা।
বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বেলজিয়ান দল ক্লাব ব্রুজের বিপক্ষে পিএসজির হয়ে মাঠে নামে বিশ্বের সেরা ত্রয়ী এমএনএম। এরপরও ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচটিতে ১-১ ড্র করেছে পিএসজি। দুটি গোলই হয়েছে প্রথমার্ধে। এররেরা পিএসজিকে এগিয়ে নেওয়ার পর ব্রুজকে সমতায় ফেরান হান্স ফানাকেন।
বলের নিয়ন্ত্রণে পিএসজি এগিয়ে থাকলেও আক্রমণে আধিপত্য ছিল ব্রুজের। প্রথমার্ধে চার শটের তিনটি লক্ষ্যে রাখা সফরকারীরা এগিয়ে যায় পঞ্চদশ মিনিটে। এ সময় কালিয়ান এমবাপে বক্সের মধ্যে বল বাড়িয়ে দেন আন্দ্রে এররেরাকে। নিখুঁত প্লেসিং শটে জাল খুঁজে নেন তিনি।
তবে বেশিক্ষণ পিএসজিকে এগিয়ে থাকতে দেয়নি ব্রুজ। ম্যাচের ২৭তম মিনিটেই সমতায় ফেরে তারা। এ সময় বামদিক থেকে বক্সের মধ্যে এদুয়ার্দ সোবোল কাটব্যাকে বল বাড়িয়ে দেন ফানাকেনের উদ্দেশ্যে। তিনি পিএসজি গোলরক্ষক কেইলর নাভাসের আয়ত্বের বাইরে দিয়ে জালে জড়ান বল।
২৯তম মিনিটে মেসির শট ক্রসবারের উপরের দিকে লেগে বেরিয়ে যায়। এরপর বিরতির আগ পর্যন্ত পিএসজিকে রীতিমতো চেপে ধরে বেলজিয়ামের দলটি। ৩৩তম মিনিটে ফানাকেনের ফ্রি কিক বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ফেরান নাভাস। ৩৯তম মিনিটে দে কেটলারার কোনাকুনি শট ফিস্ট করে কর্নারের বিনিময়ে ফিরিয়ে আবারও পিএসজির ত্রাতা কোস্টারিকার এই গোলরক্ষক।
জর্জিনিয়ো ভেইনালডাম ও লেয়ান্দ্রো পারেদেসকে তুলে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ইউলিয়ান ড্রাক্সলার ও দানিলোকে নামান পিএসজি কোচ পচেত্তিনো। কিন্তু লিগ ওয়ানের দলটির খেলায় ফেরেনি ছন্দ। বরং তাদের রক্ষণে চাপ ধরে রাখে ব্রুজ। প্রথমার্ধ শেষে ১-১ গোলের সমতায় বিরতিতে যায় উভয় দল।
দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে আরও উজ্জীবিত ফুটবল খেলে ব্রুজ। আক্রমণের পর আক্রমণ শানিয়ে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে পিএসজির রক্ষণভাগ। তৈরি করে একাধিক সুযোগও। ৪৯তম মিনিটে বড় বাঁচা বেঁচে যায় পিএসজি। সতীর্থের ছোট পাসে জ্যাক হেনরির শট এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়। একটু এদিক-ওদিক হলে হতে পারত গোল।
এরপরই চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন এমবাপে; বদলি নামেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড মাউরো ইকার্দি। প্রথমার্ধে একবার প্রতিপক্ষের ট্যাকলে চোট পেলেও চিকিৎসা নিয়ে খেলা চালিয়ে যান এমবাপে। কিন্তু দ্বিতীয় আঘাতের পর আর পারেননি তিনি।
জয় পেতে শেষ দিকে মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে পিএসজি। একের পর এক আক্রমণেও যায় তারা। সুযোগও তৈরি হয়। আবার সুযোগ নষ্টও হয়।
৮০তম মিনিটে সতীর্থের পাস পেয়ে বক্সের ভেতর থেকে বাঁ পায়ে শট নিয়েছিলেন মেসি। কিন্তু বল উড়ে যায় বেশ বাইরে দিয়ে। বাকি সময়ে এক-দুইবার হানা দিয়েছিলেন রক্ষণে, কিন্তু পারেননি প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে পরীক্ষা নিতে।
তাতে ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে ব্রুজের গ্যালারি। আর ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয় মেসি-নেইমারদের।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম ম্যাচে হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে প্রতিযোগিতাটির ২০১৯-২০ মৌসুমের রানার্সআপ পিএসজি।