সিআরবি রক্ষার আন্দোলন কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয় মন্তব্য করে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেছেন, প্রাচ্যের রানি চট্টগ্রাম একসময় নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর ছিল। কিন্তু অপরিকল্পিত উন্নয়নের কারণে আমরা সেই ঐতিহ্য অনেকটা হারিয়েছি।
উন্মুক্ত জায়গা, খেলার মাঠ নেই বললেই চলে। একটি মাত্র উন্মুক্ত স্থান সিআরবি, যেখানে মানুষ প্রাণভরে শ্বাস নিতে পারে, সেটিও ধ্বংস করার পাঁয়তারা চালানো হচ্ছে। সুস্থ ধারার প্রগতিশীল আপামর মানুষের চেতনাকে উপেক্ষা করে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট করে কোনো উন্নয়ন হতে পারে না। চট্টগ্রামের স্বার্থেই সিআরবিকে রক্ষা করতে হবে। সিআরবি রক্ষার আন্দোলন কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়, চট্টগ্রামকে বাঁচানোর জন্যই এই আন্দোলন।
আজ শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিআরবি রক্ষায় আন্দোলনকারী সংগঠন নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রামের সমাবেশে একুশে পদকপ্রাপ্ত সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন এসব কথা বলেন।
নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান ড. সেন আরো বলেন, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিধন্য এই সিআরবি। ১৯৭১ এ স্বাধীনতা যুদ্ধে বহু মানুষ শহীদ হয়েছেন এখানে। এছাড়া সিআরবি এলাকায় সাংস্কৃতিক বলয় গড়ে উঠেছে।
এখানে বর্ষ বরণ, বসন্ত উৎসব, রবীন্দ্র জয়ন্তী, নজরুল জয়ন্তীসহ বছরব্যাপী নানা সাংস্কৃতিক উৎসব হয়। মানুষ বুক ভরে শ্বাস নিতে, একটু প্রশান্তি পেতে এখানে ছুটে আসে। চট্টগ্রামের এই হৃৎপিন্ড ধ্বংস হতে দিতে পারি না।
সিআরবি এলাকাকে কালচারাল হেরিটেজ হিসেবে ঘোষিত। এটি মহামান্য রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরিত গেজটভুক্ত। সিআরবি’র সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পরিবর্তন করে সাংবিধানিক আইন লংঘন করা যাবে না। ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানে সিআরবি সংরক্ষণের সুপারিশ রয়েছে। সিআরবি’র প্রকৃতি নষ্ট করার অধিকার কারো নেই।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউনুস, আবৃত্তিকার প্রনব চৌধুরী, সাংবাদিক ঋত্বিক নয়ন, খেলাঘর সংগঠক মোরশেদ আলম চৌধূরী, জেনিফার আলম, কবি মিনু মিত্র, দিলরুবা খানম প্রমুখ।