শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শ্রমিক সাম্যের মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের পথ দেখিয়েছিলেন। এ কারণেই তিনি শ্রমিক লীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ বঙ্গন্ধুর ছয় দফা আন্দোলনে শ্রমিক শ্রেণি রক্ত দিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার শ্রমিকবান্ধব এবং তিনি গামেন্টস শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট। তিনি এ শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। আন্তর্জাতিক বাজারে গার্মেন্টস পণ্যের ন্যায্য দাম আদায়ে জোরালো দর কষাকষি করে এ শিল্পের সুরক্ষা দিয়েছেন।
সোমবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম মিলনায়তনে গার্মেন্টস্ শ্রমিক ফেডারেশন সম্মিলিত পরিষদ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাকালে জীবন-জীবিকার চাকা সচল রাখতে গার্মেন্টস শিল্পখাতে বড় অঙ্কের প্রণোদনা দিয়েছেন বলে এ শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে। এ কারণে অনেক উন্নত দেশের অর্থনীতি পঙ্গু হলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা হয়নি।
তিনি গার্মেন্টস শিল্পমালিকদের উদ্দেশে বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ খাতে প্রণোদনা দিয়েছেন শ্রমিকদের বেতন-ভাতা চলমান রাখার জন্য। দুঃখের বিষয় এখনো দেখা যায় যে, কোনো কোনো গার্মেন্টস বেতন-ভাতার জন্য শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ করতে। তাই আমি গার্মেন্টস মালিকদের সুস্পষ্ট ভাবে বলে দিতে চাই, শ্রমিকদের রক্ত ঘামে আপনারা দামি দামি গাড়ি ও বাড়ির মালিক হয়েছেন। আপনাদের অর্থবিত্তের পাহাড় হওয়ার পরও শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা যদি দেওয়া না হয়। তাহলে তার পরিণতি শুভ হবে না।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, রানা প্লাজার মতো মর্মান্তিক ট্র্যাজেডি বাংলাদেশে গার্মেন্টস শিল্প খাতকে বিদেশি ক্রেতাদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনোভাবেই যাতে না হয়।
তিনি শ্রমিক নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা পকেট ভর্তির জন্য শ্রমিক রাজনীতি করবেন না। যদি তা করেন তাহলে আপনারা মুনাফেক। কোনো মুনাফেককে সৃষ্টিকর্তা ক্ষমা করবেন না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের শ্রমে বাংলাদেশের মর্যাদা বেড়েছে এবং তারা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও জাতীয় প্রবৃদ্ধি অর্জনে অন্যতম প্রধান সহায়ক ভূমিকা রাখছেন। করোনা মহামারিকালে গার্মেন্টস শ্রমিকরা ঝুঁকি নিয়েছিলেন এবং প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও রফতানি নির্ভর এ শিল্পের চাকা সচল রেখেছেন। এ মহতী অর্জন সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ শিল্পের শ্রমিক ও মালিকদের প্রণোদনা দিয়েছিলেন বলে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন দরিদ্র দেশ নয়, বিশ্বসভায় বাংলাদেশ এখন উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির রোল মডেল।
মেয়র গার্মেন্টস শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা এখন জাতির সম্পদ। একসময় জুটমিল শ্রমিকরা জাতির সম্পদ থাকলেও সেই সোনালি দিন আজ আর নেই। সেই স্থানে উপনীত হয়েছেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা। তাই আপনাদের স্বার্থকে মালিকদের প্রাধান্য দিতে হবে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারতো প্রাধান্য দিচ্ছেন।
চট্টগ্রাম গার্মেন্টস্ শ্রমিক ফেডারেশন সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি শেখ আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলমের সঞ্চালনায় সভায় অতিথি ছিলেন ফেডারেশনের উপদেষ্টা ও নগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, নগর জাতীয় শ্রমিকলীগ সভাপতি বখতিয়ার উদ্দিন খান, মাহফুজুর রহমান খান, রফিকুল আলম সাচ্চু, জালাল উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন, দীলিপ কুমার নাথ, বেগম নাসরিন, বাপ্পি দেব বর্মণ, ফয়েজ আহমদ, নমিতা নাথ, সাইফুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।