‘গ্রেনেড হামলায় তারেক এবং বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়া সরাসরি জড়িত’; নানক

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার হত্যাকাণ্ডে তারেক রহমান জড়িত আছে বলেই দেশের বাইরে পালিয়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক।

তিনি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্যে বলেন, তারেক রহমান জড়িতই যদি না থাকে, তাহলে আপনাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন দেশ থেকে পালিয়ে দেশের বাইরে পালিয়ে রয়েছেন কেন?  আসুক না, এসে আইনের মোকাবেলা করেন।  সাহস থাকলে এসে প্রমাণ করেন ২১শে আগস্ট হত্যার সঙ্গে জড়িত না।


বুধবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর বেগম নুরজাহান মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুল মাঠে ‘১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আদাবর থানা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা ও অসহায় মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। 

আদাবর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মান্নানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সংসদ সদস্য সাদেক খান, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এ মান্নান কচিসহ মহানগর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।  
ঢাকা-১৩ আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্যদের আগমনে মোহম্মাদপুর আদাবরসহ বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীদের বিশাল জমায়েত হয়।  ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি ছোটখাট জনসভায় রূপ ধারণ করে। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, সেদিন কারা হামলা চালিয়েছিল?  মির্জা ফখরুল সাহেব জবাব দেন।  সে জবাব দিতে হবে আপনাদের জাতির কাছে।  গ্রেনেড হামলা হয়েছে তারপর গ্রেনেড হামলায় আহতদের চিকিৎসায় বাধা দিয়েছেন আপনারা, গ্রেনেড হামলায় যারা নিহত হয়েছে তাদের লাশ গুম করতে চেয়েছিলাম আপনারা। 

আর গ্রেনেড হামলার পর সংসদ অধিবেশনে আপনাদের চেয়ারপারসন  বক্তাতা করলেন, বললেন শেখ হাসিনা নাকি ভ্যানিটি ব্যাগে করে বোমা নিয়ে গেছেন, এর চেয়ে লজ্জার আর কি আছে?  আজ সবকিছু আজ খোলাসা হয়ে গেছে, পরিষ্কার হয়ে গেছে মানুষের কাছে কিভাবে হত্যার নীলনকশা হয়েছিল।  কারা কারা জড়িত ছিল। 

তারেক রহমানের উদ্দেশ্যে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাহস থাকে তো আসুন না, আর সে সময় খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী কেন পলাতক?  একমাত্র কারণ হলো যে গ্রেনেড হামলায় জড়িত ছিল, নীলনকশা করেছে তার সব বেরিয়ে এসেছে। 

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে।  কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার পিছনে যারা কলকাটি নেড়েছে তাদের মুখোশ এখনো উন্মোচিত হয়নি।  তাদের মুখোশ উন্মোচন করতেই হবে।  ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের পরে ১৯৭৫ সালে ৩ নভেম্বর জেলখানায় চার জাতীয় নেতাকে কারা অভ্যন্তরের ভেতর নির্মমভাবে হত্যা করে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়, হত্যাকারীদের দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ কে করে দিয়েছিল?  কে হত্যাকারীদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিল?  এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জিয়াউর রহমান সরাসরি জড়িত।  এই হত্যাকাণ্ডের দায়ে তাকে মরণোত্তর বিচার হতেই হবে।  মরণোত্তর বিচার করতেই হবে এর দাবি আমরা জানাচ্ছি। 

তিনি বলেন, কেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল?  মোশতাক জিয়া ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সাথে কনফেডারেশন তৈরি করতে চেয়েছিল, পাকিস্তানকে ফিরিয়ে আনার জন্য।  একটি নির্বাচিত সরকারের জোর করে বন্দুকের বেয়োনেটের মাথায় ক্ষমতাচ্যুত করা হলো।  কিন্তু আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, তখন বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার ২৪ জন মন্ত্রী সেদিন মোস্তাকের মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন।  আমরা যখন বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে গ্রামগঞ্জে ঘুরে বেড়াচ্ছি, মাথায় হুলিয়া নিয়ে ঘুরছি সেই মুহূর্তে কারা মোস্তাকের সাথে আঁতাত করেছিল?  সেদিন কেন প্রতিবাদ হয় নাই প্রতিরোধ হয় নাই, এটাও খুঁজে বের করতে হবে। 

বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশ্য বলেন, জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকে এবং আপনারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকে এদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দিয়েছেন।  আর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে।  মির্জা ফখরুল সাহেব আপনারা ভুল পথে হাঁটছেন।  ভুল পথে হাটার কারণে আপনারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।  জনগণ আপনাদের বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে মুখে থুথু মেরেছে। 

দীর্ঘ ২১ বছর জেনারেল জিয়া আর জেনারেল এরশাদ রাষ্ট্র দখল করেছিল।  আর শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ফিরে এসে তিনি বলেছিলেন আমি মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছেন দাবি করেন তিনি। 

নানক বলেন, সেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশে ফিরে বলেছিলেন, আমি পিতা হত্যার বিচার চাইতে এসেছি।  তার সেই আহ্বানে জাতীয় জাগরণ সৃষ্টি হল।  তখন আবার নতুন করে হত্যার ষড়যন্ত্র শুরু হল।  তারেক রহমান ওই হাওয়া ভবনে বসে সে সময়কার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবর আর খালেদা জিয়ার মন্ত্রিসভার সদস্য পিন্টু সাহেবরা সিদ্ধান্ত নিলো শেখ হাসিনাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে হবে।  আর সেই পরিকল্পনায় গ্রেনেড হামলা।  সেই কারণে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমার নেত্রীকে হত্যার চেষ্টা করল।  নিহত হলেন ২৪ জন।  তারেক রহমান এই হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত। 
- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img