তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি জঙ্গিগোষ্ঠী দিয়ে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল। হরকাতুল জিহাদ ও অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীসহ জামায়াতের লোকজন কিভাবে সেখানে সংযুক্ত ছিল, কিভাবে তাদের দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া হয়েছিল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই স্বীকারোক্তিমূলক সাক্ষাৎকার এখনো পাওয়া যায়।’
সোমবার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত আইভি রহমান স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। আইভি রহমান পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আকরাম হোসেনের সভাপতিত্বে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক প্রধান আলোচক হিসেবে সভায় বক্তব্য রাখেন।
তথ্যমন্ত্রী এসময় বঙ্গবন্ধু এবং ১৫ই আগস্ট ও ২১শে আগস্ট শহীদ সকলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী গ্রেনেড হামলায় নিহত আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানকে নারী জাগরণের অগ্রদূত হিসেবে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় তখন সরকারের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় হাওয়া ভবনের পরিচালনায় সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত গ্রেনেড দিয়ে ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করা হয়েছিল। তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর নিজের হাতে গ্রেনেড সরবরাহ করেছিল এবং এ বিষয়ে তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবর, ফাঁসিপ্রাপ্ত উপমন্ত্রী আব্দুস সালামের উপস্থিতিতে হাওয়া ভবনের বৈঠকে কিভাবে পরিকল্পনা হয়েছে সব আজ দিবালোকের মতো স্পষ্ট।’
‘যে সমস্ত জঙ্গিগোষ্ঠী আফগানিস্তানে তালেবানদের সাথে যুক্ত ছিল, যারা এই রাষ্ট্রটাকে তালেবানী রাষ্ট্র বানাতে চায়, তৎকালীন খালেদা জিয়ার সরকার এবং তারেক রহমান ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করার জন্য তাদেরকে কাজে লাগিয়েছিল’ উল্লেখ করেন ড. হাছান।
‘দেশটাকে তারা (বিএনপি) কোন জায়গায় নিয়ে যেতে চায়’ প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, ‘আজকেও দেখুন যে, তালেবান যখন কাবুল দখল করলো তখন ডা. জাফরুল্লাহ কি বললেন! ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত এই দেশটাকে তারা জঙ্গিদের অভয়রাণ্য বানিয়েছিল। তাদের মাধ্যমেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করেছিল, কিবরিয়া সাহেব, আহসান উল্লাহ মাস্টারকে হত্যা করেছিল, বিভিন্ন জায়গা গ্রেনেড হামলা, বোমা হামলা করেছিল। অর্থাৎ বিএনপি জঙ্গিগোষ্ঠীর সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। যারা এই রাজনীতি করে তারা কখনো দেশ ও জাতির কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। বিএনপি-জামাত এবং সংশ্লিষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর এ ধরণের জিঘাংসার অপরাজনীতি যদি বন্ধ না হয় তাহলে আমাদের দেশে রাজনীতি কখনোই পরিশুদ্ধ হবে না।
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক তার বক্তৃতায় বলেন, ‘১৫ আগস্ট ও ২১ শে আগস্টের ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো ফণা তুলতে চায়। দেশবিরোধী এসব ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে দেশের সকলকে আওয়ামী লীগের পতাকা তলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
আওয়ামী লীগ নেতা এম. এ. করিম, আইভি রহমান পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক আক্তারুজ্জামান খোকা, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা, রাজনীতিবিদ রোকন উদ্দিন পাঠান, ন্যাপ ভাসানী সভাপতি এম, এ ভাসানী, আইভি রহমান পরিষদ সদস্য আজিজুর রহমান, মাহবুব হোসেন, খালেকুজ্জামান, হোসনে আরা জলি, সমীরণ রায় প্রমুখ সভায় বক্তৃতা করেন।