চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এম.পি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু যে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন তা শোষিত মানুষের বাসযোগ্য ভূমির জন্য। শুধু ভৌগলিক স্বাধীনতা জাতির জন্য যথেষ্ট পরিচয় নয়, মূল লক্ষ্য সাম্য-মৈত্রী- শান্তি ও প্রগতির জয়যাত্রা রচনা করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সে আরাধ্য জয়যাত্রার নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
আজ ১৫ আগস্ট বিকালে থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, এবারের জাতীয় শোক দিবস ভিন্নমাত্রায় এসেছে। এটা হলো করোনাকালের দুর্যোগ-দুর্বিপাক মোকাবেলা করে সুন্দর একটি আগামীর প্রত্যাশা নিয়ে। তিনি আরো বলেন, রাজনীতিতে আমাদের সবাইকে পরিশুদ্ধ হতে হবে।
যারা একদিন ইতিহাসের চাকাকে উল্টো পথে পরিচালনা করেছে ইতিহাস নিয়ে মিথ্যাচার করেছে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে যারা ভুলন্ঠিত করে পাকিস্তানি ভাবধারায় এদেশকে পরিচালনা করেছিল তারা আজও ঘাপটি মেরে আছে তাদের মুখোশ উন্মোচিত করতে হবে এবং ইতিহাস বিকৃতিকারীদের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত করতে হবে।
জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সফলতা যেন কোন অবস্থায় ব্যার্থ না হয় সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সংগঠনের চেইন অব কমান্ড আমাদের সবাইকে মেনে চলতে হবে। উপমন্ত্রী আরো বলেন, কিছু ভুইফোড় সংগঠন আজকে ডালপালা মেলেছে। এদের কাছ থেকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, দলের আদর্শিক ত্যাগী নেতাকর্মীদের দলের নেতৃত্বে আনতে হবে। তাহলেই দল আরো শক্তিশালী হবে।
শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল আরো বলেন, কখনো কখনো শোক শক্তির উৎস হয়। শোককে শক্তিতে পরিণত করতে পেরেছি বলেই বাংলাদেশ আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং দাঁড়াবেই।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, বিশ্বের রাজনৈতিক ইতিহাসের বর্বরতম ও নৃশংস কালো অধ্যায় বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের ঘটনা। এরসঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্তরা ইতিহাসের নিকৃষ্টতম খলনায়ক।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার মাস্টার মাইন্ড ও প্রধান সুবিধাভোগী জিয়াউর রহমানের মরেনাত্তর বিচার ও শাস্তি বিধান নিশ্চিত করে ইতিহাসের দায়মুক্তি ঘটানো সময়ের দাবী।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চসিক মেয়র এম.রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে ৭৫’র ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যা করে একাত্তরের পরাজিত অপশক্তির দোসররা ভেবেছিল আবার পাকিস্তান কায়েম হবে। সেদিন যা ঘটেছিল তা একটি পৃথিবীর জঘন্যতম অপরাধ। এই অপরাধকে আড়াল করতে হত্যাকারীদের অপরাধের দায়মুক্তি জন্য রাতারাতি ইনডেমিনিটি আদেশ জারী হয়। যাকে জিয়াউর রহমান আইন সিদ্ধ করেন এবং হত্যাকারীদের পুর্নবাসিত ও পুরস্কৃতও করেন। এই অপপ্রয়াস ইতিহাসের পাপবিদ্ধ অধ্যায়।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন নগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন, সহ সভাপতি আলহাজ্ব নঈম উদ্দিন চৌধুরী, এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন, জহিরুল আলম দোভাষ, আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, উপদেষ্টা শেখ মাহমুদ ইসহাক, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, হাসান মাহমুদ শমসের, এড. শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, আহমেদুর রহমান সিদ্দিকী, হাজী মোহাম্মদ হোসেন, হাজী জহুর আহাম্মদ, মাহবুবুল হক মিয়া, জোবাইরা নার্গিস খান, দিদারুল আলম চৌধুরী, আব্দুল আহাদ, মো: আবু তাহের, ডা. ফযসাল ইকবাল চৌধুরী, শহীদুল আলম, জহর লাল হাজারী, কার্যনির্বাহী সদস্য আবুল মনসুর, সৈয়দ আমিনুল হক, ইঞ্জি: বিজয় কৃষাণ চৌধুরী, এড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, বখতিয়ার উদ্দিন খান, সাইফুদ্দীন খালেদ বাহার, মহব্বত আলী খান, ডা: নেছার উদ্দীন মঞ্জু, হাজী বেলাল আহমেদ, থানা আওয়ামী লীগের হাজী সিদ্দিক আলম, মমিনুল হক, মো: ইলিয়াস, রেজাউল করিম কায়সার সহ ৪৩ সাংগঠনিক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সহ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সভার শুরুতে বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়। এর আগে সকালে দলীয় কার্যালয়ে কালোপতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ, জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, খতমে কোরআন, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল শেষে সকাল ১০টায় হালিশহরস্থ বড়পোল মোড়ে দেশের সর্ববৃহৎ ও সর্বোচ্চ বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়।
মহানগর আওয়ামী লীগের ১০টি টিম ট্রাকযোগে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল, শাহ আমানত শাহ দরগাহ, গরীবুল্লাহ শাহ, ইসমাইল এতিমখানা, টাকসা মাজার, অপরাজেয়, উপলব্ধি, নজির শাহ, বাওয়া চিলড্রেন, মাদানী মসজিদ এবং প্রবর্তক সংঘে মোট ৭০০০ রান্না করা খাবার প্যাকেট বিতরণ করা হয়।