আধুনিক অস্ত্র আর দীর্ঘ সময়ের মার্কিন প্রশিক্ষণ থাকা সত্ত্বেও তালেবানদের সাথে পেরে উঠছে না আফগান বাহিনী। যেভাবে প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে আফগান সরকার, তাতে অনেকেই শঙ্কিত। আফগানিস্তানে তালেবানদের উত্থানে অস্থিরতা বাড়তে পারে দক্ষিণ এশিয়ায়। আর তা হলে বাংলাদেশেও উগ্রবাদীরা শক্তিশালী হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, তালেবানরা রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে বাংলাদেশের অবস্থান কি হবে, তা সময়ই বলে দেবে। এখন আফগানিস্তানের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে ঢাকা। সেখানে থাকা বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা নিয়ে দূতাবাসকে নির্দেশনাও দিয়েছে সরকার।
আফগানিস্তানে তালেবানরা রাষ্ট্রক্ষমতায় আসা এখন সময়ের ব্যাপার। তাদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে প্রকাশ্য তৎপরতাও দেখা যাচ্ছে চীন, ইরানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করেন, কাবুলের এই পরিস্থিতি কেবল আফগানিস্তান নয়, উত্তাপ ছড়াতে পারে পুরো অঞ্চলেই।
তালেবানের তৎপরতা ও ইতিহাস পর্যালোচনা করে নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের আশংকা, নতুন করে মাথাচাড়া দিতে পারে উগ্রবাদ।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইশফাক এলাহী চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে এর আগে বলা হয়েছিল, বাংলা হবে আফগান আমর হবো তালেবান। যে দলগুলো এসব কথা বলেছিল তারা এখনও আছে, এখনও তারা শক্তিশালী। আমরা হয়তো দেখছি না বা বুঝতে পারছি না। কিন্তু, তারা যে কোনো সময় রাস্তা দখল করতে মাঠে নামতে পারে। তারা আবারও মাথাচাড়া দিতে পারে। বাংলাদেশি কেউ যদি সিরিয়ায় যেতে পারে তবে আফগানিস্তানে যাওয়া তো আরও সহজ।
সার্ক সদস্য আফগানিস্তানের পরিস্থিতি ভাবনায় ফেলেছে বাংলাদেশকেও। কাবুলের গতি-প্রকৃতির দিকে সতর্ক নজর রাখছে ঢাকা। সেখানে আবারও তালেবান ক্ষমতা নিলে, ঢাকার অবস্থান কী হবে, তা নিয়েও ভাবতে হচ্ছে সরকারকে।
আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থানের ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কী হয়, আমরা নজর রাখছি। একটা সময় আমাদের দেশের অনেক লোক আফগানিস্তান থেকে ট্রেনিং নিতো এগুলো আমরা উৎখাত করে ফেলেছি। সুতরাং, নতুন করে ওখানে গিয়ে আবার জিহাদি হবে তার সুযোগ নেই। তবে আমরা এ ব্যাপারে সতর্ক আছি।
মন্ত্রী আরও বলেন, আফগানিস্তানে আমাদের দেশের অনেকে আছেন যারা বিভিন্ন এনজিওতে আমেরিকার টাকায় কাজ করেন। তালেবানরা আবার আমেরিকাকে পছন্দ করে না। তাই আমরা আমাদের সেসব নাগরিকদের সতর্ক করেছি।
সম্প্রতি তালেবানের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেবেন না তারা। তবে তাদের আশ্বাসে বিভ্রান্ত না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে আফগান সরকার।
/এস এন