আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগস্ট মাস এলেই বিএনপি রক্তাক্ত অতীতের অন্তর্জালা নিয়ে অস্থির হয়ে পড়ে।
আজ সকালে তার বাসভবনে ব্রিফিংকালে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের অসত্য ও বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদে একথা বলেন।
বিএনপি আজ আষাঢ়ে গল্প ফেঁদেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যায় নাকি আওয়ামী লীগ জড়িত এবং সরকার নাকি জিয়াউর রহমানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে চাইছে – বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্য অনেকটা ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাইনা’র মতো বলে মনে করেন ওবায়দুল কাদের।
বঙ্গবন্ধু হত্যার কুশীলব কারা তা এখন জাতির কাছে স্পষ্ট উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন কারা হত্যাকাণ্ডের বেনিফিশিয়ারী, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর খুনী মোশতাক কাকে সেনাপ্রধান করেছিলো, জিয়ার ভূমিকা কি ছিলো, খুনীরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে কার কাছে রিপোর্ট করেছিলো, তখন জিয়ার মন্তব্য কি ছিলো? এসব ঐতিহাসিক সত্য বিএনপি নেতারা নতুন করে বাকপটুতায় ধামাচাপা দেওয়ার নির্লজ্জ ব্যর্থ চেষ্টা করছে।
বিএনপির “শীবের গীত” জনগণের কাছে এখন পরিস্কার বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
বঙ্গবন্ধুর খুনীদের কারা নিরাপদে বিদেশে চলে যেতে সহযোগিতা করেছিলো? কারা পূনর্বাসন ও পুরস্কৃত করেছিলো, দূতাবাসে কে চাকরি দিয়েছিলো- এসব প্রশ্নের জবাব চেয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন তা না হলে জিয়াউর রহমানকে “ধোয়া তুলসি পাতা” বানানোর অপচেষ্টা জনগণ কখনো মেনে নেবে না।
রক্তমূল্যে অর্জিত স্বাধীন দেশের সংবিধানে খুনীদের রক্ষায় ইনডেমনিটির বিধান ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে কে সংযোজন করেছিলেন? ওবায়দুল কাদের আবারও বিএনপি মহাসচিবের কাছে জানতে চেয়ে বলেন জিয়াউর রহমান যদি এতই নিস্পাপ হয় তাহলে বিচার বন্ধ করলেন কেন?
ওবায়দুল কাদের এতসব প্রশ্নের জবাব নিশ্চয়ই বিএনপি দিতে পারবে না বলেও মনে করেন।
বিএনপি কথায় কথায় মানবাধিকারের কথা বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে,অথচ সপরিবারে জাতিরপিতাকে হত্যার একুশ বছর পর্যন্ত আমরা কোন বিচারই চাইতে পারিনি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিচার চাওয়ার অধিকার পর্যন্ত জিয়াউর রহমান কেড়ে নিয়েছিলেন। আর এখন মিষ্টি মিষ্টি কথায় নতুন ইতিহাসের প্রলাপ বকছন।
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে বহুদলীয় তামাশা আর কারফিউ গণতন্ত্রের চালু করেছিলেন জিয়াউর রহমান, ক্ষমতায় থেকে প্রহসনের নির্বাচন করেছিলেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, হ্যা- না ভোটের মাধ্যমে এদেশের নির্বাচনের ইতিহাসকে কলংকিত করেছেন জিয়াউর রহমান।
ওবায়দুল কাদের বলেন আমরা জিয়ার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে যাবো কেন? সময়ের ধারাবাহিকতায় চুল-চেরা বিশ্লেষণের মাধ্যমে ইতিহাসই যার যার স্থান নির্ধারণ করে দেয়।
তিনি বলেন, ইতিহাসের ভিলেনকে জোর করে ইতিহাসের নায়ক বানানো যায় না।
এদেশের রাজনীতিতে খুন এবং হত্যাকাণ্ডের চর্চা বিএনপির নিজস্ব পেটেন্ট উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা এখনো হত্যার রাজনীতি ছাড়তে পারেনি, তার প্রমাণ ১৫ আগস্ট, ৩রা নভেম্বর ও ২১ আগস্ট।
বিএনপি রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে হাওয়া ভবন থেকে গ্রেনেড হামলার নির্দেশনা ও মনিটরিং করে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন বেগম জিয়া সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, শেখ হাসিনা নাকি ভ্যানিটিব্যাগে করে বোমা নিয়ে গিয়েছিলেন!
তিনি প্রশ্ন রেখে আরও বলেন তাহলে জজ মিয়া নাটক কেন সাজিয়েছিলেন? কেন হত্যাকাণ্ডের আলামত নষ্ট করেছিলেন?
ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন আওয়ামী লীগকে নসিহত না করে আগে নিজেরা পরিশুদ্ধ হোন।
আওয়ামী লীগ জন্মলগ্ন থেকে জনমানুষের রাজনীতি করে, মানুষের চোখের ভাষা ও মনের ভাষা বুঝেই শেখ হাসিনা রাজনীতি করছেন এবং সরকার পরিচালনা করছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নিজেদের দুর্গন্ধময় ইতিহাস থেকে বেরিয়ে আসুক, যদি তারা সত্যিকার অর্থে এদেশে সুস্থধারার রাজনীতি করতে চায়।