মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, ইয়াবা ও সিসাসহ আটক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগ। দুই মডেলের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (উত্তর) শাখার যুগ্ম-কমিশনার হারুন-অর-রশীদ।
রোববার (১ আগস্ট) রাত ১২টার পরপরই পিয়াসাকে আটক করা হয়। এ সময় তার বাসার ভেতর তল্লাশি করে মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়।
পিয়াসার দেয়া তথ্যে আরেক মডেল মরিয়ম আক্তার মৌ-এর রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। তার বাসা থেকেও বিপুল পরিমাণ মদ উদ্ধার করা হয়। পরে রাত ১টার দিকে মৌকে আটক করা হয়। তাকেও ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, মডেল পিয়াসা ও মৌ সংঘবদ্ধ একটি চক্র। তারা পার্টির নামে উচ্চবিত্তদের বাসায় ডেকে মদ ও ইয়াবা খাইয়ে আপত্তিকর ছবি তুলে রাখতেন। পরে সেই ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিতেন।
দুই মডেলকে আটকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (উত্তর) শাখার যুগ্ম-কমিশনার হারুন-অর-রশীদ। তিনি বলেন, ‘তারা দুইজন একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে অনেক ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ পেয়েছি। সেসব ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে আজ তাদের বাসায় অভিযান চালানো হয়। দুইজনের বাসায় বিদেশি মদ, ইয়াবা, সিসা পাওয়া যায়। মৌয়ের বাড়িতে মদের বারও ছিল।’
ডিবির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আটক দুই মডেল হচ্ছেন রাতের রাণী। তারা দিনের বেলায় ঘুমাতেন এবং রাতে এসব কর্মকাণ্ড করতেন। উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের পার্টির নামে বাসায় ডেকে আনতেন তারা। বাসায় আসলে তারা তাদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলতেন এবং ভিডিও করে রাখতেন। পরবর্তীতে সেসব ভিডিও এবং ছবি ভিকটিমদের পরিবারকে পাঠানোর হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করতেন এবং মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিতেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর ও গুলশান থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক মামলা হবে। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের অভিযোগ থাকায় আলাদা মামলা হবে। এসব মামলায় তাদের রিমান্ডে নেয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।’
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের মে মাসে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারে নাম ছিল ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসার। প্রথমে মামলা করতে ভুক্তভোগীদের সহযোগিতা করেছিলেন পিয়াসা। কিন্তু সেই পিয়াসার বিরুদ্ধেই আবার মামলা তুলে নেয়ার হুমকির অভিযোগে জিডি করেছিলেন ভুক্তভোগী।
এই ঘটনার সময় আলোচনায় এসেছিলেন পিয়াসা। ওই ধর্ষণ মামলার আসামি ছিলেন আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ। আর পিয়াসা ছিলেন সাফাতের সাবেক স্ত্রী। অবশ্য রেইনট্রি হোটেলে ওই ধর্ষণ কাণ্ডের কিছুদিন আগে ডিভোর্স হয়েছিল তাদের।