গত একদিনে মহামারি করোনাভাইরাসে দেশে ২১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ২০ হাজার ৬৮৫ জনে।
এছাড়া গত কয়েক দিনের তুলনায় কম নমুনা পরীক্ষা উল্লেখিত সময়ে শনাক্ত হয়েছেন কম। এ সময়ে শনাক্ত হন ৯ হাজার ৩৬৯ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৪৮৪ জন।
শনিবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০ হাজার ৯৮০ জনের নমুন পরীক্ষা করা হয়। যাতে শনাক্ত হন ৯ হাজার ৩৬৯ জন। শনাক্তের হার ৩০.২৪ শতাংশ। এর আগে শুক্রবার (তার আগের ২৪ ঘণ্টায়) ৪৫ হাজার ৪৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ১৩ হাজার ৮৬২ জন শনাক্ত হন, যাতে শনাক্তের হার ছিল ৩০.৭৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট গড় হার ১৬.১৪ শতাংশ। গতকাল ছিল ১৬.০৮ শতাংশ।
এদিকে গত এক দিনে করোনায় মারা গেছেন ১২৮ জন। গতকাল ২১২ জন, এর আগে মঙ্গলবার ২৩৭ জন, বুধবার ২৩৭, মঙ্গলবার ২৫৮, সোমবার ২৪৭, রবিবার ২২৮, শনিবার ১৯৫ ও শুক্রবার ১৬৬ জনের মৃত্যু হয়। গত ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়ায়। এদিন মৃত্যু হয় ২০১ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পুরুষ ১৩৪জন ও নারী ৮৪ জন। নতুন মৃতদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব ১২০ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৩৭ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৩৭ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১৭ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের ৬ জন ও শূন্য থেকে ১০ বছয় বয়সী এক শিশু।
মৃত ২১২ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৬৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৫৫ জন, রাজশাহী বিভাগের ২২ জন, খুলনা বিভাগের ২৭ জন, বরিশাল বিভাগের ১০ জন, সিলেট বিভাগের ৯ জন, রংপুর বিভাগের ১৬ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ১২ জন।
গত এক দিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৪ হাজার ১৭ জন। এ নিয়ে সুস্থ হলেন ১০ লাখ ৭৮ হাজার ২১২ জন।
দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। তখন শনাক্তের হারও ৫ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তবে গত মার্চ মাস থেকে মৃত্যু ও শনাক্ত আবার বাড়তে থাকে। জুলাই মাসে দৈনিক শনাক্তের হার ২৫ শতাংশের উপরে আছে। মোট গড় হার ১৪ শতাংশের উপরে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সে হিসেবে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই বলা যায়।
বিশেষজ্ঞরা এটাকে বাংলাদেশে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলছেন। করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করায় ২৩ জুলাই থেকে আবার ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোর লকডাউন চলছে।