বড় বরাদ্ধের মেগা প্রকল্প জলাবদ্ধতা নিরসনের একমাত্র সমাধন নয়: মেয়র রেজাউল

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং খাল ও বিস্তীর্ণ জলাশয় বিলুপ্তিই নগরীতে জলাবদ্ধতা সমস্যার অন্যতম প্রধান কারণ।

তাই জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার চলমান মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নই একমাত্র সমাধান নয়; যে কারণে এই সমস্যার উদ্ভব সে-গুলোকে চিহ্নিত করে সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ গ্রহণ ও পরিকল্পনা নিয়ে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের পথ অম্বেষণই একমাত্র উপায়।

তিনি আজ মঙ্গলবার সকালে গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ডে ভরাট জলাশয় পরিষ্কার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চল ও শহরগুলোর তুলনায় চট্টগ্রাম নগরীর ভূ-প্রাকৃতিক গঠন বৈশিষ্ট্য ভিন্ন ও বৈচিত্র্যপূর্ণ। এই নগরীতে সাগর উপকূল আছে, পাহাড়-টিলা, নদী-খাল ও সমতট আছে।

কালক্রমে অনেকগুলো খাল বিলূপ্ত হয়েছে, কর্ণফুলী নদী বেদখল হয়ে সরু হয়েছে। বড় ও বিস্তীর্ণ জলাশয় ভরাট হয়ে গেছে। পাহাড়-টিলা অবিরাম কর্তন হওয়ায় পাহাড় থেকে বর্ষার ঢলে বালিয়ারি মাটি নেমে এসে বড় নালা ও খালের অস্তিত্ব মুছে দিয়েছে। আগে এক সময় চট্টগ্রামে বগার বিল ও ডাকাইত্যা বিলের মত অনেকগুলো বিস্তীর্ণ জলাশয়, দীঘি ও পুকুর ছিলো।

এগুলোতে ভরা বর্ষার পানি এসে স্থিত হতো। তারপর স্তিত পানি ধীরে ধীরে বিভিন্ন খাল হয়ে কর্ণফুলী ও হালদা নদীতে গিয়ে পড়তো। এখন স্থিত হওয়ার জন্য নগরীতে কোন বিস্তীর্ণ জলাশয় নেই। দেড় ডজনেরও বেশি খালের অস্তিত্ব মুছে গেছে।

জলাশয় ও খালগুলো অপরিকল্পিত নগরায়ন ও বড় বড় সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত ও বেসরকারি আবাসন প্রকল্প গ্রাস করে ফেলেছে। এ কারণে ভরা বর্ষায় পানির ঢল স্থিত হবে কোথায় এবর্ং কোন পথ দিয়ে নদীতে গিয়ে পড়বে? এই পানি নদীতে গিয়ে পড়লেও নাব্যতা সংকটে তার ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে।

সব মিলিয়ে এটাই হলো জলাবদ্ধতা সমস্যারআশু সমাধানে বিলুপ্ত খাল পুনরুদ্ধারসহ আরো একাধিক নতুন খাল খনন, পানি স্থিত হওয়ার জন্য জলাশয় সৃষ্টি এবং সর্বোপরি কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা রক্ষায় ক্যাপটিাল ড্রেজিং চলমান রাখা। এসব করা না হলে নগরীতে স্থায়ী জলাবদ্দতা নিরসন তো হবেই না, বরং চট্টগ্রাম বন্দরের অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি যে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে বা হচ্ছে সেগুলো যাতে একই জায়গায় আবার গড়ে উঠতে না পারে সে-ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, প্রশাসন ও নাগরিক সমাজকে সর্তক দৃষ্টি রাখা ও সজাগ থাকার আহ্বান জনান।

এই সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোরশেদ আলী, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোর্শেদুল আলম চৌধুরী, পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রনব শর্মা ও মো. আকবর প্রমুখ।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img