তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সংসদে প্রধানমন্ত্রী অপ্রিয় সত্য বলায় বিএনপির গাত্রদাহ হচ্ছে।
সোমবার দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সচিবালয়ে সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্বে নিয়োজিত গণমাধ্যমকর্মীদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এর নবনির্বাচিত কমিটির সাথে সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন, বিএসআরএফ সভাপতি তপন বিশ্বাস, সহসভাপতি মোতাহার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক এসময় বক্তব্য রাখেন।
সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে বিএনপি মহাসচিব ‘অশালীন’ বলেছেন, এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জিয়াউর রহমান অস্ত্রের জোরে ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতার উচ্ছিষ্টদের নিয়ে দল গঠন করে রাজনীতি করেছেন। অর্থাৎ এই দলটির জন্মই হচ্ছে অবৈধ, যেটি হাইকোর্টও তাদের রায়ে বলেছে। মির্জা ফখরুল, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, রিজভী আহমেদসহ বিএনপি’র প্রথম সারির নেতারা সবাই অন্য দল করতেন এবং ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট গ্রহণ করার জন্যেই বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন। সেকারণে এটি বলাতে তাদের গাত্রদাহ হচ্ছে।’
‘আসলে বিএনপির সত্যটাকে মেনে নেয়া প্রয়োজন কারণ অসত্যের ওপর দাঁড়িয়ে বেশি দিন টিকে থাকা যায় না’ বলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
শালীনতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি মির্জা ফখরুল সাহেবকে বলবো তাদের নেতাদের একটু শালীনতা শেখানোর জন্য। প্রধানমন্ত্রী ২০১৪ নির্বাচনের আগে বেগম জিয়াকে যখন ফোন করেছিলেন, তখন কেমন অশালীন ভাষায় বেগম জিয়া কথা বলেছিলেন জনগণ সেটি দেখেছে। বেগম জিয়ার দ্বিতীয় পুত্র কোকোর মৃত্যুর পর সমবেদনা জানানোর জন্য তার বাড়িতে গিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী ২০ মিনিট দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন কিন্তু বেগম জিয়া দরজা খোলেন নাই। যারা এমন অশালীন আচরণ করে তাদের মুখে শালীনতা শব্দ মানায় না।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির দু’জন সদস্যের পদত্যাগকে মির্জা ফখরুল ইসলাম ‘বহতা নদী’ আখ্যা দেয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা সাহেব ক’দিন আগে ‘পলায়ন’ শব্দ নিয়ে একটি কথা বলেছিলেন। এই পদত্যাগে মনে হচ্ছে, বিএনপি থেকে এখন পলায়ন শুরু হয়েছে। আর বিএনপি এক সময় একটা বহতা নদী ছিল। সে নদী এখন শুকিয়ে গেছে, মরে গেছে।’
বিএনপিনেত্রী খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে বিএনপির লাগাতার বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি’র সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মনে হচ্ছে, বেগম জিয়া আদালত থেকে জামিন না পাওয়া সত্ত্বেও তাকে যে মহানুভবতা দেখিয়ে কারাগারের বাইরে রাখা হয়েছে, মনে হচ্ছে সেটি আমাদের ভুল। এখন আবার সেটি পুণর্বিবেচনা করতে হবে, বেগম জিয়াকে আইন অনুযায়ী আবার জেলখানায় ফিরিয়ে দেয়া হবে কি না।’
তথ্যমন্ত্রী বিএসআরএফ-কে গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন বলে অভিহিত করেন এবং নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, সচিবালয়ের সংবাদ অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং তা নির্ভুলভাবে পরিবেশনের জন্য যত্ন প্রয়োজন।
তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন তার বক্তব্যে বিএসআরএফ সদস্যদের অভিনন্দন জানান এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড গণমাধ্যমে তুলে ধরাকে তাদের দায়িত্বের অংশ হিসেবে অভিহিত করেন।
বিএসআরএফ সভাপতি তপন বিশ্বাস সংগঠনের সদস্যদের করোনা টিকাদানে অগ্রাধিকার, সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রটি সংস্কার ও সেখানে কয়েকটি কম্পিউটার প্রদান এবং প্রেস ইনস্টিটিউটে বিএসআরএফ সদস্যদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার জন্য যে দাবি উপস্থাপন করেন, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী সেগুলোর আশু সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করবেন বলে জানান।
বিএসআরএফ এর সহ-সাধারণ সম্পাদক মেহেদী আজাদ মাসুম, সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসাইন, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক তাওহিদুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক মো. শফিউল্লাহ সুমন, দপ্তর সম্পাদক মো. মোসকায়েত মাশরেক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বাহরাম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য ইসমাইল হোসাইন রাসেল, এম এ জলিল মুন্না, মাইনুল হোসেন পিন্নু, শাহজাহান মোল্লা, হাসিফ মাহমুদ শাহ, শাহাদাত হোসেন রাকিব, মো. বেলাল হোসেন ও মো. রুবায়েত হাসান সভায় অংশ নেন। তাদের নবনির্বাচিত কমিটি সভাশেষে তথ্যমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।