ইউপি চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে আনোয়ারায় জমি বিক্রি

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ইউপি চেয়ারম্যানের প্যাড, সিল ও স্বাক্ষর জাল করে জাল ওয়ারিশ সনদ বানিয়ে এক নারীকে জমি বিক্রিতে সহায়তা করার অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।

উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের রুদুরা বড়ুয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভূয়া ওয়ারিশ সনদ দিয়ে লিলি বড়ুয়া নামে এক নারীকে তার সতীনের জমি বিক্রি করায় সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর মেয়ে শিউলি বড়ুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চাতরী ইউনিয়নের বড়ুয়া পাড়ার বাসিন্দা মানিক বড়ুয়া দুই স্ত্রী ও চার কন্যাসন্তান রেখে মারা যান। প্রথম স্ত্রীর তিন কন্যা ও দ্বিতীয় স্ত্রীর এক কন্যা রয়েছে। মানিক বড়ুয়ার স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তিতে দুই স্ত্রী ও চার কন্যা সন্তানের সবাই সমানভাবে অংশীদার।

কিন্তু মানিক বড়ুয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী লিলি বড়ুয়া ও তার কন্যা আইভী বড়ুয়া প্রথম স্ত্রী মঞ্জু বড়ুয়া এবং তার কন্যা বর্ণালী বড়ুয়া, শিউলি বড়ুয়া ও চামেলী বড়ুয়াকে বাদ দিয়ে ভূয়া ওয়ারিশ সনদ দিয়ে ভিটেবাড়ির একাংশ প্রতিবেশীর কাছে বিক্রি করে দেন। সেই প্রতিবেশী ভিটের জায়গা দখল করতে গেলে শিউলি বড়ুয়া ভূয়া ওয়ারিশ সনদের কথা জানতে পারেন।

পরে তারা ভিটেবাড়ি দখলে বাধা দিয়ে আনোয়ারা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

এদিকে ভুক্তভোগী শিউলি বড়ুয়া ভূয়া ওয়ারিশ সনদের বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনকে অভিযুক্ত করেছেন। জিয়া মেম্বার চাতরী ইউপি চেয়ারম্যানের প্যাড, সিল ও স্বাক্ষর জাল করে বর্ণালী, শিউলি ও চামেলী এবং তাদের মাকে বাদ দিয়ে জাল ওয়ারিশ সনদ বানিয়ে তার সৎমা লিলি বড়ুয়াকে ভিটে-বাড়ি বিক্রিতে সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

শিউলি বড়ুয়া বলেন, আমার বাবা মারা যাওয়ার সময় দুই স্ত্রী ও চার কন্যা রেখে মারা যান। আমরা সবাই আমার বাবার সম্পত্তিতে সমানভাবে অংশীদার। এখানে কাউকে বাদ দিয়ে ওয়ারিশ সনদ শুদ্ধ হবে না। আমার সৎমা লিলি বড়ুয়া স্থানীয় ইউপি সদস্য জিয়াউদ্দিনের সাহায্যে জাল ওয়ারিশ সনদ বানিয়ে আমাদের ভিটেবাড়ি অন্যজনকে রেজিষ্ট্রি প্রদান করেন।

তবে প্রাপ্য সম্পত্তি বিক্রি করেছেন বলে দাবি করে অভিযুক্ত লিলি বড়ুয়া বলেন, আমরা কোনো অন্যায় করিনি। আমরা সম্পত্তির যে অংশটুকু পাব সেগুলো বিক্রি করেছি। আমার মেয়ের বিয়ের জন্য টাকার প্রয়োজন হওয়ায় বিক্রি করেছি।প্রয়োজনে সম্পত্তির অন্যান্য অংশগুলোও বিক্রি করবো।

অন্যদিকে আত্মপক্ষ সমর্থন করে ইউপি সদস্য মো. জিয়াউদ্দিন বলেন, এখানে আমার কোনা দোষ নেই। স্থানীয় ইউপি সদস্য হিসেবে লিলি বড়ুয়াদের অসহায়ত্ব দেখে আমি ওয়ারিশ সনদ দিয়েছি। ওরা তো ওদের অংশ বিক্রি করেছে। প্রত্যেকটা জমিতে লিলি বড়ুয়ারা সমান অংশ পাবে। চাইলে তারা এগুলোও বিক্রি করতে পারবে।

চাতরী ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াছিন হিরু বলেন, এই ওয়ারিশ সনদ আমি দিইনি। আমার প্যাড, সিল, স্বাক্ষর জাল করে জাল ওয়ারিশ সনদটি বানানো হয়েছে। আমি সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যকে মৌখিকভাবে সতর্ক করেছি। এভাবে আর কোনো জাল সনদ করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এন-কে

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img