আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র এবং সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
মোহাম্মদ নাসিম ২০২০ সালের ১৩ জুন বেলা ১১টা ১০ মিনিটে রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। পরে তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে পরিবারের সদস্যসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা সকালে বনানী কবরস্থানে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। সেখানে দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। তার নিজ উপজেলা কাজীপুরে বেলা ১১টায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে দোয়া ও স্মরণসভার আয়োজন করবে।
এছাড়া বিকালে সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ স্মরণসভার আয়োজন করবে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং প্রধান বক্তা সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন।
গতবছরের ১ জুন অসুস্থতা নিয়ে রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। পরে রাতে তার করোনাভাইরাস পজিটিভ আসে। করোনাভাইরাস আক্রান্ত অবস্থায় মোহাম্মদ নাসিম ৫ জুন ভোরে স্ট্রোক করেন। পরে জরুরিভাবে তার অপারেশন করা হয়।
১৯৪৮ সালের ২ এপ্রিল সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলায় এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মোহাম্মদ নাসিম। তার পিতা পিতা শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। যিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে গঠিত বাংলাদেশ সরকারে অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এবং স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধু সরকারের মন্ত্রীসভায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
মোহাম্মদ নাসিম জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন মোহাম্মদ নাসিম। ওই সম্মেলনে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের যুব সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৮৭ সালের সম্মেলনে তিনি দলের প্রচার সম্পাদক মনোনীত হন।
১৯৮৬ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মোহাম্মদ নাসিম। তখন সংসদে বিরোধীদলীয় হুইপের দায়িত্ব পান তিনি। এরপর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে সারা দেশে সংগঠনকে গড়ে তোলার দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
১৯৯১ সালের সংসদে বিরোধী দলের প্রধান হুইপ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন মোহাম্মদ নাসিম। এছাড়া আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সাবেক সমন্বয়ক ও মুখপাত্রসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও ছয়বারের সংসদ সদস্য ছিলেন প্রয়াত এ নেতা।
রাজনীতির পাশাপাশি সমাজকল্যাণমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম। ঢাকাসহ নিজ এলাকা সিরাজগঞ্জে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন।
মোহাম্মদ নাসিম তিন সন্তানের পিতা। তার স্ত্রী লায়লা আরজুমান্দ।