জাতীয় পরিচয়পত্র দেবার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হাতেই থাকা উচিত: তথ্যমন্ত্রী

‘বিশ্বের সকল দেশের মতো জাতীয় পরিচয়পত্র দেবার দায়িত্ব সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হাতেই থাকা উচিত’ বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

সোমবার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে ৩১ মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে ‘মানস-মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা’ আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যশেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা নির্বাচন কমিশন থেকে সরকারের অন্য দফতরে গেলে জটিলতা তৈরি হবে বলে যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, সেবিষয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী একথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র আর ভোটার আইডি কার্ড এক বিষয় নয়। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাইকে জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হয়। পৃথিবীর সবদেশে এই জাতীয় পরিচয়পত্র দেয় স্বরাষ্ট্র অথবা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। এটি নির্বাচন কমিশন করেনা। নির্বাচন কমিশন শুধু ভোটার তালিকা নিয়ে কাজ করে।’

‘বাংলাদেশে যখন শুধু ভোটার তালিকা প্রণয়নের প্রকল্প ছিল, তখন সেটি যৌক্তিকভাবেই নির্বাচন কমিশনের হাতে ছিল; এখন যখন ভোটার তালিকা নয়, জাতীয় পরিচয়পত্র করা হচ্ছে, তখন পৃথিবীর সব দেশের মতো এটি সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হাতে থাকাই যুক্তিযুক্ত’ বলেন ড. হাছান।

আরো যুক্তি তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমত জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার জন্য সকল তথ্য-উপাত্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংগ্রহ করে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাসপোর্ট দেয়। বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদেরকেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাসপোর্ট দেয়। তাদেরকেও জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হবে। সুতরাং এক্ষেত্রে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেটি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতোই সিদ্ধান্ত।’

আর জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার পর ১৮ বছরের বেশি বয়স্ক যারা ভোটার হওয়ার জন্য উপযুক্ত, তাদের তালিকা তো অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের হাতে হস্তান্তর করা হবে উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, এখানে নির্বাচন কমিশন থেকে যে আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে সেটি আসলে অমূলক এবং এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে থাকাই যুক্তিযুক্ত।

এসময় বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম জিয়ার সর্বোচ্চ চিকিৎসার জন্য সরকার সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তার পছন্দনীয় হাসপাতাল ও ডাক্তারদের মাধ্যমে তিনি চিকিৎসা পাচ্ছেন। এবং সুচিকিৎসা পাওয়ার কারণেই তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন। তিনি যে শারীরিক সমস্যাগুলোর চিকিৎসা ২০ বছর থেকে নিচ্ছেন, সেগুলোর সমস্ত চিকিৎসা দেশেই আছে। বিদেশে নেয়ার দাবিটা অমূলক। বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো, তাকে কারাগারে না রেখে প্রধানমন্ত্রী যে বাইরে রেখেছেন এজন্য প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।’

তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ধুমপানমুক্ত করা সরকারের লক্ষ্য। সরকারের নানা পদক্ষেপের কারণে দেশে ধুমপায়ীর সংখ্যা আনুপাতিক হারে কমছে। দেশের আইন অনুযায়ী প্রকাশ্যে ধুমপান দন্ডনীয় অপরাধ। ধুমপানের বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে ক্রমবর্ধমান জনসচেতনতার জন্য মন্ত্রী ‘মানস’সহ ধুমপানবিরোধী সংগঠনগুলোকে ধন্যবাদ জানান।

মানস সভাপতি অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব ও মূল-প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তার গ্রন্থিত ‘ধুমপান থেকে মাদকাসক্তি’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচনে তথ্যমন্ত্রীর সাথে অংশ নেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি, দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, বিশিষ্ট উপস্থাপনশিল্পী রেহানা পারভীন ও মানস সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস ওয়াহীদ।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img