রাজশাহী, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪:
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে মানুষের মাঝে সংস্কারের প্রবল আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। আমরা রাষ্ট্রকাঠামোতে মানুষের সেই আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে চাই। তবে, বিতর্ক সৃষ্টি হয় এরূপ কোন কাজে হাত দেওয়া হবে না। কারণ, এতে সংস্কার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
শনিবার দুপুরে ইসলামিক ফাউন্ডেশন রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের সভাকক্ষে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুরক্ষা এবং সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদক, নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা প্রতিরোধে ওলামা-মাশায়েখ ও হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় ধর্ম উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
ড. খালিদ আরো বলেন, আমি রাজনীতির উর্ধ্বে ওঠে আমার মন্ত্রণালয়কে পরিচালনা করছি। আমি আাগামীদিনেও একইভাবে পরিচালনা করে যাব। অতিমাত্রায় দলীয়করণ করে ইসলামিক ফাউণ্ডেশনকে শেষ করা হয়েছে। আমি এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে চাই।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বাগানে নানাধরণের ফুল থাকলে বাগানের সৌন্দর্য ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। এটা হলো বৈচিত্র্য। বাংলাদেশ বৈচিত্র্যময় দেশ। এদেশে নানাধর্মের লোক থাকবে। গীর্জায় ঘন্টাধ্বনি হবে, মন্দিরে উলুধ্বনি হবে, মসজিদ হতে আযানের ধ্বনি উচ্চারিত হবে- এরূপ সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করতে চাই। যতদিন দায়িত্বে আছি ততদিন আমি হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সকল ধর্মাবলম্বীর পাশে থাকব। তিনি বলেন, পারস্পরিক ভালোবাসা, শ্রদ্ধাবোধ ও সহানুভূতির মাধ্যমে আমরা কাছাকাছি আসতে পারি। আমাদের মধ্যে সম্প্রীতি যেমন আছে, তেমন বিভাজনও আছে। আমাদেরকে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, আবহমানকাল ধরে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্য চলে আসছে। মাঝেমধ্যে কিছু দুষ্টচক্র আমাদের এই সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যে ফাটল ধরাবার অপপ্রয়াস চালিয়েছে। এখনও চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই দুষ্কৃতিকারিদের কালো হাত ভেঙে দিতে পারি।
ড. খালিদ বলেন, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদক ও নারী নির্যাতন-এগুলো অপরাধ। ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান সকল ধর্মেই এগুলো নিষিদ্ধ। এসকল ব্যাধি প্রতিরোধে আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারি। তিনি দেশের উন্নয়নে এসকল সামাজিক সমস্যা প্রতিরোধে সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানান।
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য কিছু মানুষ সুযোগের অপেক্ষায় আছে। তারা যেকোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে পারে। এদের বিষয়ে আমাদেরকে সোচ্চার থাকতে হবে। পূজা মন্ডপের নিরাপত্তায় কমিটি গঠন করতে হবে এবং এসকল কমিটিতে স্থানীয় কমিউনিটির লোকজনকে সম্পৃক্ত করতে হবে।