সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ শুরু করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সাড়ে ১২টা থেকে ১টার দিকে তারা অবস্থান নেয়া শুরু করেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভে যোগ দেয়ার কথা। তারা মিছিল নিয়ে পথে আছে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
একই সঙ্গে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আজ থেকে আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এছাড়ারও বিক্ষোভে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা কলেজ, বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, ঢাকা নার্সিং কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী যোগ দিয়েছেন।
রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘লাখো শহীদের রক্তে কেনা-দেশটা কারো বাপের না’, ‘তুমি নও আমি নই-রাজাকার রাজাকার’, ‘কে রাজাকার কে রাজাকার-তুই রাজাকার তুই রাজাকার’, ‘এসো ভাই এসো বোন-গড়ে তুলি আন্দোলন’, ‘কোটা না মেধা-মেধা মেধা’, ‘আপস না সংগ্রাম-সংগ্রাম সংগ্রাম’ -স্লোগান দিচ্ছেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশের মাত্র ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ মানুষের জন্য ৩৬ শতাংশ কোটা রয়েছে। জেলা কোটা ও নারী কোটাসহ মোট কোটা ৫৬ শতাংশ। কিন্তু এই কোটাগুলোর ১০ ভাগের বেশি পূরণ হচ্ছে না৷ তাই আমাদের দাবি, সর্বোচ্চ ১০ ভাগ কোটা রেখে কোটা সংস্কার করা হোক।
আন্দোলনকারীদের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বেলা পৌনে দুইটার দিকে বিক্ষোভে বক্তব্য দিয়েছেন ৷
তিনি বলেছেন, ‘যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত দাবিতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করলে আমাদের দাবিয়ে রাখার ক্ষমতা কারও নেই ৷ দেশকে এগিয়ে নিতে হলে মেধাকে প্রাধান্য দেওয়ার বিকল্প নেই ৷ ৫৬ শতাংশ কোটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে যায় না ৷’
প্রধানমন্ত্রীর গতকাল রোববার রাতের বক্তব্য শিক্ষার্থীদের আশাহত করেছে বলে জানিয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য একটাই, কোটার যৌক্তিক সংস্কার। আমরা যেন দ্রুত পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে পারি, সেই ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে। দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।’
সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, যত বাধা আসুক তারা মাঠ ছাড়বে না। তারা তাদের অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন।
এসময় ঘোষণা মঞ্চ থেকে বলা হয়, ছাত্রলীগ এলেও আমরা সরবো না। রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবো। আমরা দেখছি আমাদের ওপর হামলা করার জন্য ক্যাম্পাসে টোকাইদের জড়ো করা হচ্ছে। আমরা ভয় পাবো না। আমরা মাঠ ছাড়বো না।
এদিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মহসীন হলের মাঠে অবস্থান নিয়েছেন।
এমজে/